Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

নিবন্ধ

অর্থনীতিবিদ নুরুল ইসলামের সময় এবং তারপর-১

সনৎকুমার সাহা। প্রতিকৃতি অঙ্কন: সব্যসাচী মজুমদার

আমাদের দেশে অর্থনীতির সৃষ্টিশীল চর্চায় যাঁদের মেধার ছাপ কোনোদিন মুছে যাবার নয়, ড. নুরুল ইসলাম (১৯২৯-২০২৩) নিঃসন্দেহে তাঁদের অগ্রগণ্য। ব্যতিক্রমী প্রতিভার পরিচয় মেলে তাঁর ছাত্রজীবনেই। কর্মজীবনে তিনি তাকে আরো শাণিত করেন। পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ ছিল নজিরবিহীন। তিনি ভয় পাননি। পিছিয়েও আসেননি। শাস্ত্রজ্ঞানের বিস্তার ঘটান প্রয়োগকলায়। অভিজ্ঞতা তত্ত্বভূমিকে প্রসারিত করে। নিরাসক্ত সন্ন্যাসীর নিষ্ঠায় অসংখ্য বাধা-বিপত্তি-বিভ্রান্তি পেরিয়ে পূর্বনির্ধারিত সময়সীমায় আগামীর নির্দেশ রচনায় তাঁর যে সিদ্ধির স্বাক্ষর অবিমোচ্য থেকে যায় তার তুল্য কৃতিত্ব অনুরূপ প্রেক্ষাপটে গোটা পৃথিবীতেই বিরল। অবশ্য অর্জন তাঁর একার নয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের চার কীর্তিমান সদস্যের চার প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদের তালিকায় প্রথম উচ্চারিত নামটি তাঁর। অন্য তিনজন—

ড. মুশাররফ হোসেন, ড. রেহমান সোবহান, ড. আনিসুর রহমান। ড. নুরুল ইসলাম ডেপুটি চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান সরকারপ্রধান স্বয়ং।

        গত শতকের পঞ্চাশের দশকে শুধু আমাদের এখানে নয়, অন্যত্রও বিদ্যাচর্চায় অর্থনীতির মর্যাদা অনেক বেড়েছে। তিরিশ ও চল্লিশের দশকে মন্দা, মহাযুদ্ধ, ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই— এই সব যুগান্তকারী অস্থিরতার অভিঘাতে বাস্তব জীবনভাবনার সব চেনা ছকে ফাটল ধরা, প্রত্যক্ষের সম্পর্করাশিতে পারস্পরিক দেওয়া-নেওয়ার পরিচিত মানচিত্র বদলে যেতে থাকা, ইহজাগতিক বিষয়-আশয়ের সুবিন্যাস্ত রূপকাঠামোর সংযোগরেখাগুলো সাজিয়ে তুলে তাদের স্রোতোস্বিনী করার পথ খোঁজা—

এগুলো মানুষের বেঁচে থাকার অন্তহীন অনুশীলনে ভেতরের তাগিদেই অগ্রাধিকার পেয়ে সামনে চলে আসে। এটা খেয়াল করি, এক শতাব্দী আগেও অর্থনীতির আলাদা স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো বিষয়-মহিমা ছিল না। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থশাস্ত্র মিলে রাজনৈতিক অর্থনীতি নামে বিদ্যার এক মিশ্র শাখা পঠনপাঠনে জায়গা পেয়েছিল। পাশ্চাত্যে মূলধারাও ছিল এইরকম। কিন্তু উৎপাদনে-বণ্টনে বহুমুখী জটিলতা, ব্যক্তি ও সমাজজীবনে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার গুরুত্ব, তাদের প্রত্যাশিত মান নির্ণয়, ব্যষ্টি ও সমষ্টির চাওয়া-পাওয়ায় সুরসাম্যের অন্বেষণ, ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতেই প্রত্যেকের সীমিত সাধ্যের ভাগজোক করে চাহিদার সর্বোত্তম আয়োজন মেটাবার ব্যবস্থা— এসবের যৌক্তিক মোকাবেলায় অর্থনীতি স্বয়ংসিদ্ধ নিজস্ব ভুবন গড়ে তোলে। অনুমান, প্রত্যেক মানুষই তার সর্বোত্তম চাহিদা নিজের ইচ্ছার সীমায় মেটাতে চায়। ফলাফল নির্ভর করে ছোটবড় সব উদ্যোগের পরিণামে। ক্রিয়ায়-প্রতিক্রিয়ায় অসংখ্য ইচ্ছার সমাহার। করার ও হওয়ার অন্তহীন ধারা তাদের সবাইকে নিয়েই গতি পায় মহাকালে। নৈর্ব্যক্তিক বাস্তবতায় তা ন্যায়-অন্যায় কিছুই নয়। কিন্তু স্থান-কালের প্রতিটি আপেক্ষিকতায় তার চলমানতায় ভালো-মন্দ, সৎ-অসৎয়ের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিফলন বিরতিহীন ঘটে চলে। অনন্য নয়। যে যেমন দেখি, তেমন। অর্থনীতির বেলাতেও। মহামন্দা ও বিউপনিবেশায়ন প্রেক্ষাপট যখন বদলে দেয়, তখন তার মুখোমুখি হতে অর্থনীতিও মানুষের ভাবনাজগতে অগ্রগণ্য হয়ে উঠতে থাকে। ঔপনিবেশিক অভিজ্ঞতা পেরিয়ে এই উপমহাদেশেও।

        সাতচল্লিশের দেশভাগের সময় নুরুল ইসলাম ছিলেন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্সের ছাত্র। ওই কলেজের খ্যাতি তখন আকাশছোঁয়া। সেরা অধ্যাপক ও সেরা ছাত্রের সেখানে সমাবেশ। তিনি এতটুকু বেমানান ছিলেন না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারে ১৯৪৬-এর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঐচ্ছিক বিষয় বাদ দিয়ে মেধাতালিকায় তিনি প্রথম হন। বলা যায়, প্রেসিডেন্সিতে পড়ার অধিকার তাঁর স্বোপার্জিত। বিষয় নির্বাচনে অর্থনীতি কিন্তু তখনই অনেকটা সামনে চলে এসেছে। বিশ্বব্যাপী সংকট নতুন নতুন প্রশ্ন জাগায়। মেধাও অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। নুরুল ইসলামের আত্মবিশ্বাস ও লড়াকু মেজাজ তাঁকে ভেতর থেকে প্রেরণা জোগায়। পারিবারিক ঐতিহ্যও সহায়। বাবা ছিলেন তাঁর সময়ের নামকরা ছাত্র। শিক্ষকতা পেশা ও ব্রত। তাঁর ব্যক্তিত্বের ছাপ পড়ে ছেলের ভেতরেও। প্রেসিডেন্সি কলেজের নাম-যশ তাঁকে এতটুকু ঘাবড়ে দেয় না।

        তবে ইতিহাসের বাঁকবদল সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। সাতচল্লিশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ও দেশভাগ। এক ধাক্কায় নুরুল ইসলাম ছিটকে পড়লেন ঢাকায়। এমন নয় যে তিনি ছিন্নমূল হলেন। তিনি এ বাংলারই। আদি নিবাস চট্টগ্রাম। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দু বাহু বাড়িয়ে গ্রহণ করেনি। অনার্স পাঠক্রম ঢাকায় তিন বছরের। কলকাতায় মেয়াদ দু বছর। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা আসে এই বলে যে, কলকাতার মান তুলনায় দুর্বল। উদ্বাস্তু ছাত্ররা বরং পাসকোর্সে বি.এ. পাশের পর দু বছরের এম.এ. করে পাঠ সম্পন্ন করুক। নুরুল ইসলামের বাবা ছিলেন তাঁর সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রদের একজন। স্বয়ং উপাচার্যও তাঁকে সমীহ করতেন। ছেলের অনার্স কোর্সে ভর্তি হবার যোগ্যতা তিনি এমন জোরালোভাবে তুলে ধরেন যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা উপেক্ষা করতে পারে না। নুরুল ইসলাম যে শুধু সেখানে নির্বিবাদে পাঠ সম্পন্ন করেন তা-ই নয়– অনার্স পরীক্ষায় সেই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বিষয় মিলিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশেষ মর্যাদার ‘কালীনারায়ণ বৃত্তি’ও অর্জন করেন। অর্থনীতির মতো বিষয় নিয়ে এই বৃত্তি পাওয়া ছিল এক দুর্লভ কৃতিত্ব।

        কলকাতা থেকে এসে সেশনের মাঝপথে নুরুল ইসলামের ঢাকায় ভর্তি হতে পারাটা তাঁর মতো ভুক্তভোগী অন্যদেরও সুযোগ করে দেয়। উল্লেখ করার মতো আর একটি নাম মুশাররফ হোসেন। দুজনই প্রেসিডেন্সির সহপাঠী। তবে মুশাররফ হোসেন শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চেষ্টা করেননি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে রাজশাহী কলেজে অনার্স চালু ছিল অনেক আগে থেকে। তিনি দেশভাগের পর পর সোজা রাজশাহী এসে অর্থনীতি অনার্সে অপরিবর্তিত পাঠ বজায় রাখেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নুরুল ইসলামের সফল উদ্যোগ তাঁকেও অনুপ্রাণিত করে। কালবিলম্ব না করে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। সেখানে দুই বন্ধু আবার একই ক্লাসে মিলিত হন।

        আগেই বলেছি, ওই সময়ের বিশ্ববাস্তবতায় অর্থনীতির প্রশ্ন-মীমাংসা সবখানে মেধার চর্চায় অগ্রাধিকার পেতে শুরু করেছে। সমাজ, রাষ্ট্র ও সম্পদের সীমা আর স্ববিরোধ যেমন আপন আপন তাগিদে অর্থনীতির প্রত্যক্ষ বিবেচনার অন্তর্গত হয়, তেমনি অসংখ্য সংকটে সমাধানের পথ খোঁজাও অর্থনীতিবিদের চিন্তার অনুশীলনে নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। বস্তুজগতের বহুমাত্রিকতা মৌলিক ভাবনার বিচিত্র পথ খুলে দেয়। দেশ-কাল-পাত্রের বিবিধ রেখা সম্ভাবনার ক্ষেত্রকে নানাদিকে প্রসারিত করে। বলা যেতে পারে, সমাজবিকাশের ধারায় এই তাগিদগুলো সব সময়ে কার্যকর। বিভিন্ন ক্রিয়ায় দ্বন্দ্ব-বিরোধের পাশাপাশি পারস্পরিক সমন্বয় ও সামঞ্জস্যের পথ খোঁজাও মানব বাস্তবতায় এক অন্তর্জাত প্রবণতা। স্বয়ংক্রিয় সম্পর্ক-সমন্ধে উৎপাদন-বিনিময়-বণ্টন ক্রিয়া ধারাবাহিক রূপ পায়। কর্মকাণ্ডে বিরতিহীন বিকাশ ঘটে চলে। প্রাচীনতর অভ্যাসের অবলুপ্তিও অবশ্য উপেক্ষণীয় নয়। আরো বেশি গুরুত্ব পেতে থাকে উৎপাদনে প্রযুক্তির রূপান্তর, যন্ত্রবিজ্ঞানে বিস্ময়কর উদ্ভাবন, পুঁজিপণ্যের অকল্পনীয় কর্তৃত্ব। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রয়োজন ক্রমাগত বেড়ে চলে। বাড়ে রাষ্ট্রশক্তির সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। মহাযুদ্ধ, বিউপনিবেশায়ন, রাষ্ট্র পরিচালনায় বিবিধ অভিজ্ঞতা— এ সবই অর্থনীতির প্রয়োগকলাকে মহার্ঘ করে তোলে। তুলনামূলকভাবে সদ্য-স্বাধীন দেশগুলোতে আরো বেশি। তার প্রভাব পড়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে, মেধার সরবরাহেও।

        তবে শুরুতে আরো একটা বিষয় আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বোধ হয় তার প্রভাবই মৌলিক। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি প্রত্যেকের আত্মস্বার্থপরায়ণতা। আপন আপন সাধ্যের সীমায় থেকে থেকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তার সর্বোত্তম চরিতার্থতা খোঁজে। চাইবার শেষ নেই। কিন্তু সক্ষমতা সীমিত। আবার সেখানেও আছে একে-অন্যে কাড়াকাড়ি। সবাই যদি যেমন খুশি তেমন চলার অধিকার পায়, তবে মাৎস্যন্যায়ই শেষমেশ চূড়ান্ত বাস্তব। সমাজ-সভ্যতা কিছুই তাহলে দাঁড়ায় না। একত্র বসবাসের রীতিনীতি, অভিজ্ঞতার আলোকে দীর্ঘ-দীর্ঘ কালের অভ্যাসে মানুষই পরস্পরের সহযোগিতা-প্রতিযোগিতায় গড়ে তোলে। যার যেমন খুশি— সেভাবে নয়; আবার প্রত্যেকের পছন্দ-অপছন্দ বাদ দিয়েও নয়। সব মিলিয়ে জীবনযাপন। সবাইকে নিয়ে বসবাস, প্রেমে-অপ্রেমে-সহযোগিতায়-উদাসীনতায়। এ সবের চলমান সারসত্তায় অর্থনীতির দৃষ্টি অভিক্ষেপ। ন্যায়-অন্যায়, কল্যাণ-অকল্যাণ— সবই আপেক্ষিক। কখনো কখনো সম্ভাবনা অনিশ্চিত, বাস্তব অনির্দিষ্ট। অর্থনীতির সুশৃঙ্খল চর্চা এমন পরিস্থিতিতে বেশি গুরুত্ব পায়। যেমন পেয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানে, বিউপনিবেশায়নের প্রত্যাশায় ও সম্ভাবনায়। এই উপমহাদেশেও। উঠতি মেধার পাঠ নির্বাচনে সাধারণত গুরুত্ব পায় সেই সব বিষয়, সমাজে বিবিধ কর্মযোজনায় যাদের চাহিদা বেশি। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দও ভূমিকা রাখে অবশ্যই। মেধার কৌতূহল সাধারণত ব্যাপক। সেখানে বাইরের চাহিদা, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা— এগুলো বিষয় বেছে নেওয়ায় ইন্ধন জোগায়। ছেলেমেয়েদের এবং তাদের অভিভাবকদেরও স্বপ্ন-বাসনা এসবে যোগ হয়। প্রতিযোগিতাও একটা ব্যাপার। তবে তুলনায় বেশি মেধাবী যারা, তারা সাধারণত আপন-আপন পছন্দের বিষয় বেছে নিতে তেমন বেগ পায় না।

বিষয়টি কাকতালীয় নয় যে তখন পৃথিবী জুড়ে সব দেশেই অর্থনীতি মেধার চর্চায় অগ্রাধিকার পেতে শুরু করেছে। ঐতিহ্য যেমনই হোক। ঔপনিবেশিক অভিজ্ঞতা পেরিয়ে এই উপমহাদেশে যেমন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ও রাষ্ট্রের আধিপত্যেও তেমন। তবে আমাদের গাঁটছড়া বাঁধা পাশ্চাত্যের বিদ্যানুশীলনের ধারায়। স্বীকৃতি ও প্রতিষ্ঠাও তারই পরিমণ্ডলে। নুরুল ইসলামের ব্যতিক্রমী মেধা তাঁকে অনায়াস সাফল্য এনে দেয়। ফোর্ড ফাউন্ডেশন বৃত্তি চলে আসে তাঁর হাতের মুঠোয়। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করে ফিরে এসে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায়। ওই বয়সেই তিনি বিশ্বনন্দিত। তাঁর ডক্টরেট থিসিসের বিষয় ছিল, ‘‘Foreign Capital and Economic Development: Japan, India, and Canada.’’। বিশ্ব-অর্থনীতির সমকালীন প্রেক্ষাপটে খুবই প্রাসঙ্গিক; একই সঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণে দক্ষ ও বহুমাত্রিক। ইউরোপ-আমেরিকার পৃথিবীখ্যাত বিভিন্ন বিদ্যাপীঠ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়। অর্থনীতিবিদ হিসেবে মেধার স্বীকৃতি তাঁর সর্বত্র। পাকিস্তানেও সর্বাগ্রগণ্য। তাই করাচিতে ‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিকস’ প্রতিষ্ঠিত হলে ১৯৬৪ সালে তার চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর নিয়োগ সর্বত্র স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন পায়। তাঁর নেতৃত্বে ওই ইন্সটিটিউটের গবেষণা পত্রিকা আন্তর্জাতিকভাবে সর্বোচ্চ মানের বলে স্বীকৃতি অর্জন করে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানটিকে উন্নয়ন অর্থনীতির চর্চায়— এমনকি, নতুন ধারণার নির্মাণেও বিশিষ্ট করে তোলে। এই প্রতিষ্ঠানে প্রফেসর নুরুল ইসলাম তাঁর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আজিজুর রহমান খান, আমিনুল ইসলাম, স্বদেশরঞ্জন বোস—

এঁদেরও নিয়ে যান। ড. মোজাফ্ফর আহমদও তখন করাচিতে, হাবিব ব্যাংকের একজন গবেষণা প্রধান। ১৯৬৭-তে ড. আনিসুর রহমান ইসলামাবাদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির প্রফেসর ও সমাজবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের পরিচালকের পদে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়ে তা গ্রহণ করেন। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও সিদ্দিকুর রহমান ওসমানিকে তিনিই ঢাকা থেকে ছাত্র হিসেবে সেখানে ভর্তি করেন— তাঁরা নিরাশ করেননি। করাচিতে নুরুল ইসলাম ও তাঁর টিমের সঙ্গেও আনিসুর রহমানের যোগাযোগ গড়ে ওঠে। বিষয়টি অবাক করার মতোই, অর্থনীতিতে আমাদের সেরা মেধাবীদের বেশির ভাগ তখন পশ্চিম পাকিস্তানে। সেখানে তাঁদের পারস্পরিক যোগাযোগ অর্থনৈতিক বৈষম্যের ধারণাকে সুনির্দিষ্ট যৌক্তিক শৃঙ্খলায় আনায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৬৯-এ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরই সূত্র ধরে একাত্তরে মুক্তিসংগ্রামে দিক-নির্দেশক প্রথম মুহূর্তে তাঁদের অমূল্য অবদান রাখা।

        তবে ভাগ্যের এক নির্মম কৌতুক, পশ্চিম পাকিস্তানে থেকে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ্যার সেরা মেধা যখন শাস্ত্রের চর্চায় ও তার সৃষ্টিশীল প্রয়োগকলায় যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন— ঠিক তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পার করছে তার সবচেয়ে রাহুগ্রস্ত দুঃসময়। আইয়ুব-মোনেম চক্রের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তা হয়ে উঠেছে এক দুঃশাসনের আস্তানা। নামকরা ও প্রতিশ্রুতিশীল অর্থনীতিবিদ প্রায় সবাই তখন এখানে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। কপট মুদ্রা আসল মুদ্রাকে বাজারছাড়া করে, অর্থনীতির এই প্রবচন ‘গ্রেশাম’স্ ল’ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রাস করতে বসেছে।

        পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ভিন্ন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তখন পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির কল্যাণে নিট আয়ে পূর্বখণ্ড  উদ্বৃত্ত, যেখানে পশ্চিমখণ্ডের ঘাটতি মেটাতে ব্যবহৃত হয় পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত লভ্যাংশ। পাকিস্তানের মুদ্রামান কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে রেখে পাটচাষিদের তাদের নায্য পাওনা থেকে ঠকানো হয়, আর পশ্চিম পাকিস্তানী ব্যাপারীদের মুদ্রামানের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হয় রপ্তানি আয়ের ওপর বোনাস ঘোষণা করে। মোট বিনিয়োগের ও বৈদেশিক সাহায্যের সিংহভাগ ব্যয় হয় পশ্চিম পাকিস্তানে, যদিও জনসংখ্যার অনুপাতে ওই সব অংকের বৃহদাংশ দাবি করতে পারে পূর্বাঞ্চল। পাকিস্তানের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সম্পদ বরাদ্দের ও ব্যবহারের কাল থেকেই এই বিষয়গুলো এখানে অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসেছে। ১৯৬০ সালে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান অর্থনীতি সমিতির বার্ষিক অধিবেশনে ‘এক রাষ্ট্র, দুই অর্থনীতি’-র তত্ত্ব ও অভিজ্ঞতা নিয়ে সভাপতি ড. মির্জা নুরুল হুদার নেতৃত্বে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত ও গৃহীত হয়। উপস্থিত পশ্চিম পাকিস্তানী অর্থনীতিবিদরাও তার সাক্ষী ছিলেন।

        উন্নয়ন অর্থনীতির শাস্ত্রীয় বিচারে পাকিস্তানের বিধিবদ্ধ ছক যে প্রত্যাখ্যাত ছিল, এ কথা কিন্তু যথার্থ নয়। আর্থার লিউইসের ধ্রুপদী ভাবনার অনুসরণে গুস্তাভ রানিস ও জন ফেই ১৯৬১ সালে তাঁদের পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে করা গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিক ও অন্তর্বতী পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তা শুধু শিল্প খাতে নয়, কৃষিতেও। এবং কৃষিকে বিনিয়োগযোগ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে তাঁরা সুপারিশ করেন জমির মালিকানার আয়তন বৃদ্ধির। তাতে কৃষিতেই উদ্বৃত্ত সঞ্চয় একত্রে মেলা সহজ হবে। শ্রম নিয়োগে দক্ষতা বাড়বে। বাড়বে উৎপাদনশীলতা। কৃষিও এখানে শিল্পায়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। পাকিস্তানী নীতিনির্ধারকদের পেছনে যে কায়েমি স্বার্থ সক্রিয়, তাদের কাছে এমন দাওয়াই খুবই যুৎসই মনে হয়। সমরশাসনে জবরদখলও প্রশ্রয় পায়। রাতারাতি জমির মালিকানায় আগের ঊর্ধ্বসীমা উঠে যায়। জমির প্রভুরাও যে রাষ্ট্রশক্তির অংশীদার এবং সেই সূত্রে উন্নয়নেরও— এই ‘যুক্তিশৃঙ্খলা’ সম্পদ সৃষ্টি ও সম্পদ-বণ্টনে প্রাথমিকতা পেতে শুরু করে। আসলে উইলিয়াম রোস্টো’র উন্নয়নের ‘নন কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো’-কে আরো বিচিত্র ও জোরদার করায় এ এক জবরদস্ত প্রয়াস।

        এই অনুশীলনকে তার যৌক্তিক কাঠামোয় সুসংহত ও সুবিন্যস্ত মনে না করার কোনো কারণ নেই। কোথাও যে তার প্রয়োগ কখনো কার্যকর হয়নি, তাও নয়। কিন্তু সব সময় তা ন্যায্য, এ কথা বলা যায় না। অর্থনীতিতে প্রত্যয়ে ও যুক্তিতে, যুক্তিতে ও ঘটনায় সব সময় সমীকরণই অন্বিষ্ট— এবং সেইটিই যথার্থ— এমন প্রস্তাবও সমর্থন করা যায় না। হার্ভার্ড বিশেষজ্ঞদের (সবার নয়, বিশেষ কার্য-কারণের অনুসারী) নাকের ডগায় বসিয়ে রেখে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পাকিস্তানের কায়েমি স্বার্থ অর্থনীতির পরিচালনায় তাদের দখল নিষ্কণ্টক করতে চেয়েছে। কিন্তু বাস্তব তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দুই ধরনের প্রেক্ষাপটে দুই ভূখণ্ডের অধিবাসীদের ভাষা, সংস্কৃতি ও অভিজ্ঞতার বিভিন্নতাকে উপেক্ষা  করে ড্রয়িং টেবিলে সরলাংক কষা কোনো কাঙ্খিত সমাধানের নিশ্চয়তা দেয় না। অর্থনীতির ন্যায়-অন্যায়, দুটোই স্থান-কালে আপেক্ষিক। বাস্তবে পরিবর্তমান। এও খেয়াল করবার, একক মানুষও প্রতিটি মুহূর্তে বদলায়। সমষ্টির চলমান রেখা তাই সব সময়ে অনেকান্তিক। অভিজ্ঞতার ইতিহাস তার সবটা ধরে রাখে। চলার তাগিদও আসে সেখান থেকে। হ্যাঁ ও না, দুটোই বহু রূপে বহু ভগ্নাংশে চেতনায় মেশে। একাকার হয়। কারবারে প্রত্যক্ষ তার অনুমোদিত মান কিছু পাই। কিন্তু চৈতন্যের খোলা পটে দরাদরি অবিরাম চলে। প্রত্যেকের। সকলের। সমাজ ও রাষ্ট্র তার প্রতিফলন ঘটায়। বাজার ব্যবস্থা তাকে সচল রাখে। গ্রামব্যবস্থা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক স্তরে কেনাকাটা পর্যন্ত।

ষাটের দশকের শেষে নুরুল ইসলাম নিঃসন্দেহে গোটা পাকিস্তানে সর্বাগ্রগণ্য অর্থনীতিবিদ। স্বীকৃতি তাঁর দুনিয়া জুড়েই। সময়টা এমন, যখন অর্থনীতিও নোবেল পুরস্কারের জন্য একটি সম্মানিত বিষয় বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। এবং নুরুল ইসলাম বিশ্বের সেরা অর্থনীতিবিদদের মঞ্চে নিজের মর্যাদার একটা জায়গা তখনই করে নিয়েছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর সঙ্গী সহকর্মী-সহমর্মী, যাঁদের উল্লেখ আগেই করেছি— তাঁরা প্রত্যেকে তখন দিক-দিগন্তরে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। আত্মবিস্মৃত হয়ে নয়। বরং আত্মপরিচয়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা— দুটোকেই নিরাসক্ত বিচারের দাঁড়িপাল্লায় তুলে ধরে।

        আগেই বলেছি, বিউপনিবেশায়ন, অনুন্নয়ন, উন্নয়নের পথ সন্ধান—এগুলো ওই কালপর্বে অর্থনীতিবিদদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ মেধার মনোযোগ তারা পায়। তাঁদের তালিকায় এই অর্থনীতিবিদরাও থাকেন। আরো ছিলেন ড. মাহবুবুল হক— পাকিস্তানের। জাতিসংঘের মানবসম্পদ উন্নয়নসূচক নির্মাণকলা তাঁরই অবদান। নুরুল ইসলাম, মুশাররফ হোসেন, রেহমান সোবহান ছিলেন তাঁর সমমনা, সমসাময়িক। এঁদের অভিনিবেশের জায়গাও ছিল কাছাকাছি। তত্ত্বান্বেষী আনিসুর রহমান মানবমুক্তির পথের অন্বেষণে আরো আন্তরিক। ষাটের দশকে তাঁদের প্রত্যেকের প্রতিভা মধ্যগগনে।

        কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্ব সংকট তখন চূড়ান্ত বিস্ফোরণোন্মুখ। মূল কারণ এই নয় যে দুই খণ্ডের মাঝে দেড় হাজার মাইলের ব্যবধান। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতেও বিস্তর তফাৎ। সরাসরি যা বিভেদ বাড়ায়, তা হলো এক অংশের মুষ্টিমেয় স্বার্থচক্রের দুই খণ্ডেই দখলদারি বজায় রাখা। অস্বীকার করা যায় না, এমন কাণ্ডেরও অর্থনৈতিক গুরু জোটে। সবটাই নৈর্ব্যক্তিক সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে। এবং শোষণকাণ্ড লাগামছাড়া বিস্তার পায় সর্বত্র। কিন্তু পারস্পরিক দূরত্বে পূর্বাঞ্চলের শোষণ গণচেতনায় আলাদা মাত্রা যোগ করে। অনুন্নয়নের অর্থনীতির একটি ধারার তা এক নিকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে ওঠে। এই বাস্তবতাতেই ১৯৬৯-এ করাচিতে বঙ্গবন্ধু ও নুরুল ইসলামের প্রথম সাক্ষাৎ—যদিও ছেষট্টিতে বিখ্যাত ‘ছয় দফায়’ অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের যৌক্তিক বস্তুকাঠামো রচনায় পূর্বে উল্লেখিত প্রত্যেক প্রধান অর্থনীতিবিদ নিজের ভূমিকা রাখেন। সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন অবশ্য প্রফেসর রেহমান সোবহান। এবং তৃণমূল পর্যায়ে সম্পদ বণ্টনের বিচার-বিশ্লেষণে প্রাথমিক তথ্যনির্ভর যৌক্তিক পথ পরিক্রমায় সবচেয়ে মূল্যবান অবদান মেলে প্রফেসর মুশাররফ হোসেনের পর্যায়ক্রমিক গবেষণালব্ধ প্রতিবেদনে।

১৯৭০-এ নুরুল ইসলাম ‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিকস’-এর প্রধান কার্যালয় করাচি থেকে ঢাকায় স্থানান্তরে সফল হন। ওই ক্রান্তিকালে পরিস্থিতিই যেন তাঁর পথনির্দেশে সহায় হয়। প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটে আনিসুর রহমানের বেলায়। তিনিও ওই বছরে ইসলামাবাদ ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। এক বছর আগে পতন ঘটে আইয়ুব খানের। সেই সঙ্গে ঢাকাতেও মোনেম খানের ছোটলাটগিরির অবসান। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্রবল আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিক্রিয়াশীলতার দুর্গ তছনছ। ইয়াহিয়া খান নতুন করে মার্শাল ল জারি করলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণতান্ত্রিক সমানাধিকারের ভিত্তিতে সাধারণ নির্বাচনের। তাতে জাতীয় পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের আসনসংখ্যা এককভাবে সংখ্যাগুরু হয়ে দাঁড়ায়। সম্ভবত পূর্বাংশে আস্থা ফেরাবার আশাতেই নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এমন একজনকে, যিনি ভদ্র ও নমনীয়। হয়তো সেই মুহূর্তে একটা স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছিল। রেহমান সোবহানও এই রকম পরিস্থিতিতে নতুন সম্ভাবনার আশায় লন্ডনে উচ্চতর গবেষণার পরিমণ্ডল পেছনে ফেলে ঢাকায় ফিরে আসেন। মুশাররফ হোসেন নাফিল্ড ফেলোশিপে বিলেতে দু বছর কাটিয়ে আটষট্টির শেষে আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যাবর্তন করে সেখানে মুক্ত মানবতা ও ন্যায়-ভাবনার বিকাশে আত্মনিয়োগ করেন।

কোনো পরিকল্পিত যোগাযোগে নয়, পরিস্থিতির নিজস্ব তাড়নায় নুরুল ইসলাম ও তাঁর মতো আমাদের প্রধান অর্থনীতিবিদ ক’জন ১৯৭০-এর ওই নির্ধারণী কালখণ্ডে এই বাংলাতে এসে জোটেন। ফল হয় সুদূরপ্রসারী, যদিও অর্থনীতি শাস্ত্রের অনুশীলনে তাঁরা সবাই সমান একনিষ্ঠ থাকেন না। তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্য তাঁদের ক’জনের যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশের নির্মাণকলায় বিপুল মেধার সংযোগ ঘটায়।

(দ্বিতীয় কিস্তিতে সমাপ্য)

লেখক: শিক্ষাবিদ ও লেখক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সাবেক সদস্য।

দ্বিতীয় কিস্তি পড়ুন : অর্থনীতিবিদ নুরুল ইসলামের সময় এবং তারপর-(২)

ad

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত