Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

আফগান ভয় দূর করতেই হবে বাংলাদেশকে

সাকিব ২
[publishpress_authors_box]

সহকারী কোচ নিক পোথাস মনের জোড়েই বলছেন আফগানিস্তানকে হারাতে মুখিয়ে তারা। গ্রীক বংশোদ্ভুত বৃটিশ এই কোচ অবশ্য এমনই। মনের জোড়কেই বড় করে দেখেন। বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব ভালো ভাবেই পার করেছে। কিন্তু সুপার এইটে এসে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে নিজেদের ক্রিকেট পার্থক্য টের পেয়েছে।

ভারতের সঙ্গে হার হজমের পরদিন আফগানিস্তানের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হেরে যাওয়ার খবর শুনতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। সি গ্রুপ থেকে তিন জয়ে নিউজিল্যান্ডকে পিছনে ফেলে সুপার এইটে পা রেখেছে আফগানরা। অজিদের হারিয়ে সেমিফাইনাল স্বপ্নও উজ্জ্বল করেছে। তবুও কোচ নিক পোথাস আফগানিস্তানকে হারানোর চ্যালেঞ্জ নিলেন। এবার আফগান ভয় দূর করতেই হবে বাংলাদেশকে।

আছে সেমিফাইনালের আশা

অস্ট্রেলিয়াকে গত ম্যাচে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের উপকার করেছে আফগানিস্তান। তাতে শেষ চারে যাওয়া ক্ষীণ সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। ক্রিকেটের কঠিন সত্য মেনে আফগানদেরই কাঁদিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথ নাজমুল শান্তদের জন্য কঠিন। আগে নিজেদের জিততে হবে এরপর ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

এই ম্যাচে রশিদ খানদের সঙ্গে প্রথমত ৩১ রানে জিততে হবে। তখনই নেট রাট রেটে আফগানদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। এরপর শান্তদের ভাগ্য খুলতে অস্ট্রেলিয়াকে ভারতের কাছে হারতে হবে ৫৫ রানে । তবেই অজিদেরও টপকে ভারতের পর দ্বিতীয় হতে পারে বাংলাদেশ। এই সমীকরনের বাইরে আর যে কোন ফলাফল বা সমীকরণে বাংলাদেশের শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ নেই।

যেভাবে জিততে পারে বাংলাদেশ

আফগানিস্তানকে হারানোর একটি সহজ পথ আছে। দলটির দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানকে শুরুতেই আউট করতে হবে। তবেই জয়ের পথ অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ড গড়েছে এই দুই ব্যাটার। এখন পর্যন্ত খেলা ৫ ম্যাচে তিনটি শতরান ছাড়ানো জুটিতে করেছেন ৩৮৩ রান। সর্বোচ্চ ১৫৪।

অথচ এ দুই ব্যাটার যে দুই ম্যাচে দ্রুত ফিরেছেন ওই দুটি ম্যাচে হেরেছে আফগানিস্তান। ভারতের বিপক্ষে মাত্র ১৩ রান টিকেছিল গুরবাজ-ইব্রাহিম জুটি। দল ওই ম্যাচে ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হারে ৪৭ রানে। এর আগে গ্রুপ পর্বে উইন্ডিযজের বিপক্ষে কোন রান করার আগেই ভেঙ্গে যায় এ জুটি। এরপর ১১৪ রানে অলআউট হয়ে ১০৪ রানের বিশাল হার হজম করে আফগানরা।

তাই বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকবে দুই ওপেনারকে দ্রুত ফেরানোর। সেই লক্ষ্যে সফল হতেই পারেন নাজমুল শান্তরা। তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেনরা পুরো আসর জুড়েই বাংলাদেশের লড়াইয়ের শক্তি হয়েছেন। তাই আফগানদের কম রানে আটকে দিতে হলে আরও একবার বোলারদের দায়িত্ব নিতে হবে।

সাবধান হতে হবে ব্যাটারদের

বোলাররা যেমন দায়িত্ব নেবেন বাংলাদেশ ব্যাটারদেরও সাবধান হতে হবে। স্বস্তির খবর গত দুই ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে দ্রুত উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। এভাবে পরিকল্পনা রেখে খেললে ১৫০ রান করার লক্ষ্য রাখতেই পারে। অবশ্য শুরুতে একটু বেশি ধীর রান তোলায় পরের দিকে ব্যাটারদের জন্য চাপ বেড়ে যায়।

তবুও টপঅর্ডারের দ্রুত সাজঘরে ফেরার চেয়ে উইকেটে থেকে রান তোলাও ভালো। বাংলাদেশ টপঅর্ডাররা আরও একটু সাবধানী হয়ে পাওয়ার প্লেতে শুরুর ১০ ওভারে ৭০-৮০ রান তুললে পরের দিকের ব্যাটারদের জন্য রান তোলার কাজটা সহজ হয়।

বাংলাদেশ ব্যাটারদের সাবধানী হওয়ার আরেকটি কারণ আফগান বোলিং লাইন। রশিদ খানদের আক্রমণে দারুণ বৈচিত্র্য আছে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তা কখনই ভারতের বোলিং আক্রমণের মতো শক্ত বা দুর্বোধ্য নয়। তাছাড়া গত বছরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ও ২০২৩ বিশ্বকাপে জয়ের আত্মবিশ্বাস আছে বাংলাদেশের।

নিক পোথাসের বিশ্বাস

সহকারী কোচের বিশ্বাসম অতীত সাফল্যের কারণে। আফগানদের বিপক্ষে আগের জয় থেকে ভরসা পাচ্ছেন তিনি, “প্রতিটি ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে চাইবেন। আমরাও প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে তুলবো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের অনেক সাফল্য আছে। ওদের বিপক্ষে সিরিজও জিতেছি। সেই বিশ্বাস থেকে আমরা এই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ শেষ করতে চাই।”

তবে পোথাস মেনে নিয়েছেন বড় দলগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের পাওয়ার হিটিংয়ে দুর্বলতা আছে। এমনকি এ জায়গায় আফগানিস্তানও এগিয়ে, “মানুষের আশা অনেক বেশি থাকে। আমরা এই প্রথম (দ্বিতীয়বার) সুপার এইটে খেললাম যা অনেক বড় অর্জন। দুটো খুব ভালো দলের বিপক্ষে আমরা হেরেছি। বড় দলের সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা দেখতে হবে। পাওয়ার ক্রিকেট ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বীতা সম্ভব নয়। পাওয়ার প্রয়োজন।”

সেন্ট ভিনসেন্ট বলে বিশ্বাস বাড়ছে

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সুপার এইটের শেষ ম্যাচটি হবে সেন্ট ভিনসেন্টে। যেখানে গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে খেলেছিল বাংলাদেশ। এই মাঠের পিচ ধীর ও নিচু প্রকৃতির। এখানে স্পিন ও স্লোয়ার-কাটার বল ভালো হয়। সেই সুবিধা নিয়ে ডাচ ও নেপালকে সহজেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ।   

ভয় হলো আফগানদের জন্যও এই পিচ সুবিধার। এই মাঠেই কম রান করেও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে তারা। তাই আফগানিস্তানও এই পিচে খেলতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান ভাববে। কিন্তু এমন পিচে বাংলাদেশ-আফগান লড়াইয়ে আগেও এগিয়ে থেকেছে বাংলাদেশ। আফগানদের পেস শক্তি দিয়ে আটকে দিলে শেষটা জয়ে রাঙ্গাতেই পারে বাংলাদেশ।

একাদশ

আগের ম্যাচে তাসকিন আহমেদকে একাদশের বাইরে রেখে ভুল করেছিল বাংলাদেশ। তাতে একজন বোলার কম নিয়ে খেলতে হয়েছে। এই ম্যাচেও তাসকিন বাইরে থাকতে পারেন। তার জায়গায় সুযোগ হতে পারে শরিফুল ইসলামের। আর একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন জাকের আলি। আফগানিস্তানের দুই ডানহাতি ওপেনারকে আটকাতে শুরুতে শরিফুল কার্যকর হতে পারেন।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত