Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

বিমানের ভাবনায় এয়ারবাস, আছে বোয়িংও

রবিবার দুপুরে বলাকা ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
রবিবার দুপুরে বলাকা ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

রুট সম্প্রসারণ ও যাত্রীর চাপ বিবেচনায় রেখে আগামী ১০ বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে আরও ৩২টি এয়ারক্রাফটের প্রয়োজন। এই চাহিদা মেটাতে ইউরোপীয় বহুজাতিক উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে সক্রিয়ভাবে এয়ারক্রাফট কেনার চিন্তাভাবনা চলছে।

রবিবার দুপুরে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা।

তিনি বলেন, “আমরা দেখছি, ২০৩৫ সালের মধ্যে রুট সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিমানের মোট ৪৭টি উড়োজাহাজের প্রয়োজন। বর্তমানে বিমান বহরের ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৬টি ফেজ আউট হবে। সেজন্য আরও ৩২টি উড়োজাহাজ পারচেজ অথবা লিজের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এয়ারবাসের সঙ্গে বিমানের আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। বোয়িংও বিমানকে তাদের উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। বোয়িংয়ের প্রস্তাব রিভিউ করব। আমাদের দুটিরই প্রয়োজন আছে।”

বিমান শিগগিরই নতুন পাঁচটি রুট সম্প্রসারণ করবে জানিয়ে নতুন এমডি বলেন, “আমাদের এক্সিস্টিং ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। মালে, কুনবিং, জাকার্তা, সিউল ও সিডনিতে আমরা পর্যাক্রমে ফ্লাইট পরিচালনার প্রত্যাশা করছি।”

বিমানের আয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মো. জাহিদুল ইসলাম ভুঞা বলেন, “প্রোফিট-লস সিএ ফার্ম দিয়ে নির্ণয় করা হয়। এছাড়া পেট্রোবাংলার বিপিসিতে আমরা নিয়মিত পেমেন্ট করে যাচ্ছি। বকেয়া কমানোর প্রক্রিয়া অন গোয়িং আছে।”

গত অর্থবছরে বিমান তার বহরে থাকা ২১টি উড়োজাহাজ (এয়ারক্রাফট) দিয়ে ৩২ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে এবং এই সময়ে সংস্থাটি ১০ হাজার কোটি টাকা আয়ের মাইলফলক অর্জন করেছে।

এ বছর আয় আরও বাড়বে– এমন আশাবাদ জানিয়ে জাহিদুল বলেন, “কার্গো থেকে ১২০০ কোটি আয়ের আশা করছি। গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের আইএসও সাটিফিকেশন পেলে এটি বিশাল অর্জন হবে। বিভিন্ন বিভাগ থেকেই আমরা ভালো করছি।”

তিনি বলেন, “বিমান মিডিয়াম রিস্ক ক্যাটাগরি থেকে লো রিস্ক ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া বিমান দুটি ৭৭৭ উড়োজাহাজের পুরো অর্থ পরিশোধ করেছে। আরও দুটিরও শোধ হওয়ার পথে।”

বিমানের ফ্লাইট শিডিউল বিড়ম্বনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের অন-টাইম পারফমেন্স নরমালি ৭৪ পার্সেন্ট। গত মাসের সেটি ৬৭ শতাংশ ছিল। কীভাবে ডিলে কমানো যায় সে বিষয়ে আমি পরিকল্পনা করছি।”

বিমানকে দুর্নীতিমুক্ত করা হবে জানিয়ে নতুন এমডি বলেন, “দুর্নীতি করে কেউ এগোতে পারে না। এর আগে এখানে যারা দুর্নীতি করেছে বিভিন্ন লেয়ারে তাদের শাস্তি হয়েছে। কাউকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, কাউকে পদাবনতি করা হয়েছে, কারও বেতন কমানো হয়েছে। আমিও এই জায়গাগুলোতে কাজ করব এবং অব্যাহত রাখব।”

টিকেট নাই, অথচ বিমানের সিট ফাঁকা– এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, “এটির সমাধানকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। এই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান করতে চাই। ডিজিটালের পূর্ণ সুবিধা ব্যবহার করে যাত্রীদের সুবিধা দিতে চাই।”

গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব বিমানকে দেওয়ার বিষয়ে মো. জাহিদুল ইসলাম ভুঞা বলেন,“তৃতীয় টার্মিনালে সেবা দিতে বিমান পুরোপুরি প্রস্তুত। এক হাজার কোটি টাকার যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে। জাইকার সঙ্গে মিলে কিভাবে আরও প্রশিক্ষণ বাড়ানো যায় তা নিয়ে কাজ করছি। তৃতীয় টার্মিনালে সেবা দিতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। যতটুকু জানি বিমানকে দেয়ার ব্যাপারটি সরকারেরও সক্রিয় বিবেচনায় আছে।”

গত ২৭ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বিমানের এমডি পদে মো. জাহিদুল ইসলাম ভুঞাকে নিয়োগের কথা জানানো হয়। তিনি বিসিএস প্রশাসন প্রশাসন ক্যাডারের ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে গত সাড়ে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর জাহিদুল ইসলাম ভূঞা শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। তিনি সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব (শ্রম) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত