ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার ২১ লাখ মানুষকে বিতাড়িত করে সেটিকে একটি মনোরম অবকাশযাপন কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এনিয়ে একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাবও করেছেন তিনি।
কিন্তু তার এই আকাঙ্ক্ষায় বাদ সাধছে ফিলিস্তিনিরা।
তাতে অবশ্য ক্ষান্ত হচ্ছেন না গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসা ট্রাম্প। বিভিন্নভাবে তিনি গাজা ঘিরে তার ভিশনের কথা বিশ্বকে জানাচ্ছেন। যেমন, সম্প্রতি তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) দিয়ে একটি ভিডিও বানিয়ে তা নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে পোস্ট করেছেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গাজার কোনও এক জায়গায় ট্রাম্পের একটি সোনালী রঙা মূর্তি বসানো। সেখানে তাকে দেখাচ্ছে স্বৈরাচারের মতো। আর তার ঘনিষ্ঠ মিত্র বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক বসে বসে মধ্যপ্রাচ্যের মজাদার খাবার হামুস খাচ্ছেন।
ভিডিওর আরেক দৃশ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে উর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত অবস্থায় ট্রাম্পকে গাজার সমুদ্র সৈকতে বসে ককটেল পান করতে দেখা গেছে। পেছনে রয়েছে আকাশচুম্বী ভবন ও বাহারি নকশার বিলাসবহুল প্রমোদতরী।
ট্রাম্পের পোস্ট করা ভিডিওটি দেখে অনেকে হেসে ফেললেও হামাস এটি দেখে জানিয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মুখপাত্র ও রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম মার্কিন সাময়িকী নিউজউইককে বলেছেন, “গাজা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের সংস্কৃতি ও স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
তিনি বলেন, “গাজার মানুষ সেই দিনের অপেক্ষায় আছে, যখন তারা দেখবে গাজা পুনর্গঠিত হয়েছে, অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, এখানকার প্রতিটি শিশুর জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়েছে।
“কিন্তু গাজা তো এখন একটা বড় কারাগার। এর ভেতরে থেকে সেই দিন কখনও আসবে না।
“আমরা কারাগারের অবস্থা উন্নত করার জন্য লড়ছি না, বরং কারাগার ও এর কারারক্ষী থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি।”
ফিলিস্তিনের গাজায় এ মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি চলছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ, যাতে প্রাণ হারায় প্রায় ৪৯ হাজার ফিলিস্তিনি। গৃহহীন হয় এক লাখের বেশি মানুষ। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গাজা।