কী ঘটেছিল পরীক্ষার দিন
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের প্রভাষক হিসেবে ডা. রায়হান শরীফ যোগ দেন ২০২৩ সালের মার্চে। এর কয়েক মাসের মধ্যেই তার উগ্র আচরণ আর অস্ত্রের প্রদর্শনী নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী, কর্মচারী থেকে শুরু করে ক্যান্টিনের লোকজনও। তবে কেউ প্রতিবাদ করেননি, অভিযোগ করার সাহসও পাননি।
৪ মার্চ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফরেনসিক পার্টের মৌখিক পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল ফরেনসিক বিভাগের প্রধান আব্দুলাহ হেল কাফীর। তিনি না থাকায় পরীক্ষা নেন রায়হান শরীফ। সেদিন পিস্তল হাতের মুঠোয় নাচাতে-নাচাতে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালের পায়ে গুলি করেন রায়হান।
শুক্রবার হলে ফিরেছেন তমাল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল সন্ধ্যার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল ইচ্ছাকৃত। রায়হান স্যার ঠান্ডা মাথায় আমাকে গুলি করেন।”
তমালের সহপাঠীদের বক্তব্য অনুযায়ী শিক্ষক রায়হান ছাত্র তমালের উপর রেগে ছিলেন ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই।
তমালের বন্ধু ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, “পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে ক্লাসে কুরুচিপূর্ণ জোকস শুনিয়েছিলেন রায়হান স্যার। তখন অনেকে হাসাহাসি করে। কিন্তু স্যারের নজর পড়ে তমালের ওপর।
“তমালকে দাঁড় করায়ে হাসাহাসির কারণ জিজ্ঞেস করেন রায়হান স্যার। তমাল কোনও উত্তর না দিয়ে চুপ ছিল। স্যার তখন তাকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, “তুই কীভাবে আইটেম (মৌখিক পরীক্ষা) পাস করিস দেখব!”
মারুফ বলেন, “তখন থেকেই স্যারের টার্গেটে ছিল তমাল। এমনকি হাজিরা খাতায় তার নাম লাল কালিতে কেটেও দিয়েছিলেন রায়হান স্যার।”
তমালের এই বন্ধু আরও অভিযোগ করেন, রায়হান শরীফের কথামতো পিকনিকে না যাওয়ায় তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।
মারুফ বলেন, “৪ মার্চ কয়েকজনের মৌখিক পরীক্ষা নেন স্যার। এরপর ক্লাস নেওয়ার সময় তিনি আমাদের বলেন, ‘আপনাদের বললাম আমার সঙ্গে পিকনিকে যেতে। আপনারা আমার কথা শুনলেন না। শুনলে ভালো করতেন। আপনারা কেউ পোষা প্রাণী পালেন?’ তখন তমাল বলেছিল, তার একটা পাখি আছে। এ কথা শোনার পর রায়হান স্যার বলেন, ‘আমারও পোষা পাখি আছে।’”
এরপর কী ঘটে জানতে চাইলে মারুফ বলেন, “ক্লাসরুমের টেবিলে আগে থেকেই পিস্তল বের করে রাখা ছিল। সেটি দেখিয়ে স্যার বলেন, ‘এটা আমার পোষা পাখি। এটাকে যা বলি, তাই শুনে।’ ওই সময় তিনি পিস্তলটি উপরে তুলে তমাল যেদিকে ছিল, সেদিকে তাক করেন। বলেন, ‘এই যে এটা লক করা। এখন গুলি বের হবে না।’ ট্রিগার চেপেও দেখান তিনি। এরপর আনলক করে ট্রিগার চাপেন, ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে শব্দ হয়। তখন দেখি তমালের পায়ে গুলি লেগেছে।”
ক্যান্টিনেও পিস্তল, খাওয়া বাকিতে
অভিযোগ আছে, ২০২৩ সালে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর একবার এক রিকশাওয়ালাকে পিস্তল উঁচিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন রায়হান। তার এমন উদ্ধত আচরণ থেকে বাদ পড়েননি কলেজের ক্যান্টিনের কর্মচারীরা। ক্যান্টিনে খাবার খেতে গিয়ে ছোটখাটো ঘটনায়ও তাদের পিস্তল দেখাতেন। অনেক সময় ক্যান্টিনের টেবিলে পিস্তল রেখে খেতে বসতেন তিনি।
ক্যান্টিনটি পরিচালনা করেন মো. স্বপন শেখ। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি জানান, এই ক্যান্টিনে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষকরা খাওয়া-দাওয়া করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন রায়হান শরীফও। তবে তিনি খাবারের বিল ঠিকমতো দিতেন না। যা খেতেন, সব বাকি থাকত। কালেভদ্রে বিল দিতেন।
স্বপন শেখ বলেন, “রায়হান স্যারের নামে এখন ১০ হাজার টাকা বাকি আছে। তিনি অনেকদিন পর পর কিছু টাকা দিতেন। তাকে তো টাকার কথা বলা যেত না। মন চাইলে দিতেন।”
টাকা চাইতে না পারার কারণ জানতে চাইলে স্বপন বলেন, “স্যার অনেক বদমেজাজি। আমার সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করেননি। তবে কর্মচারীদের প্রায়ই হুমকি-ধমকি দিতেন। ক্যান্টিনে এসে টেবিলে পিস্তল রাখতেন। কয়েকবার কর্মচারীদের পিস্তল দিয়ে ভয়ও দেখিয়েছেন তিনি।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা করতেন
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছেন, রায়হান শরীফ তাদের সঙ্গে কম কথা বলতেন। বললেও গলা চড়া থাকত। ক্লাসে ‘কুরুচিপূর্ণ কৌতুক’ বলতে পছন্দ করতেন তিনি। ছাত্রীদের ‘বাজে’ ইঙ্গিত দিতেন। প্রায়ই রাতে ছাত্রদের রুমে আসতেন। তাদের গান গাইতে বাধ্য করতেন।
অনেক সময় ছাত্রদের হলের ছাদে নিয়ে গিয়ে পিস্তল দিয়ে গুলি করা দেখাতেন। ছাত্রীদের কাছে নাস্তা পাঠাতেন। মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রেম-বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহফিমা আক্তার শাম্মা বলেন, “রায়হান স্যারকে আমরা কম পেয়েছি। তবে আমাদের আগের আপুদের কাছে শুনেছি, তাদের অনেককে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাবও পেয়েছেন অনেকে।
“আমাদের ক্ষেত্রে যেটা বেশি হয়েছে, তিনি ফোন দিতেন। দিলে একাধারে সবাইকে ফোন দিতে থাকতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না কেউ ফোন ধরছে। এরপর তাকে পিকনিকে যাওয়ার প্রস্তাব দিতেন।”
শিক্ষার্থীদের নীরবতার কারণ
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা আরও জানান, মেডিকেলে পড়তে গেলে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা পুরোপুরি শিক্ষকদের হাতে থাকে।
এ কারণে রায়হান স্যারের ‘আপত্তিকর আচরণ’ নিয়ে শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতেন না। তাছাড়া মেডিকেল কলেজটির বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাইরের জেলা থেকে সেখানে পড়তে গেছে। ডা. রায়হান একদিকে স্থানীয়, তার ওপর রাজনীতি করেন। এসব কারণে সবাই তাকে ভয় পেত।
গত বছরের শেষ দিকে মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে পিস্তল দেখানো নিয়ে কিছুটা রোষানলে পড়েন রায়হান। তবে ওই সময় এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।
অবশ্য সে সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ডা. রায়হান বেশ কিছুদিন পিস্তল বের করা থেকে বিরত ছিলেন বলে দাবি করেন শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ হৃদয়।
সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “মেডিকেলে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু বলা অনেক কঠিন শিক্ষার্থীদের। কারণ মৌখিক পরীক্ষা পুরোটাই শিক্ষকদের হাতে থাকে। এখানে পড়ালেখা এমনিতেই কঠিন। একবার ফেল করলে ছয় মাস পিছিয়ে পড়তে হয়।”
তমালের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা উল্লেখ করে ওয়ালিউল্লাহ বলেন, “এবার আমরা ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। তমালের পায়ে গুলি লাগার পর ক্লাস বর্জন করে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকটি দাবি জানিয়েছি।
“ফলশ্রুতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি।”
শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজটি নতুন হওয়ায় শিক্ষক সংকট রয়েছে। তাই শিক্ষক হিসেবে কেউ আবেদন করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদনটি সাদরে গ্রহণ করে।
সরকারি এই মেডিকেল কলেজে রায়হানের কর্মজীবন প্রায় এক বছরের। তবে তার উগ্র জীবনযাপন প্রথম দিকে বোঝা যায়নি। গত বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ তা সবার নজরে আসতে থাকে। রায়হানের হাতে অস্ত্র অধিকাংশ শিক্ষক বহুবার দেখেছেন। তবে তারা জানতেন, এটির লাইসেন্স আছে। তমালের পায়ে গুলি লাগার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের সবাই জানতে পারেন, অস্ত্রটি অবৈধ।
পরে শিক্ষকরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খোঁজখবর নিয়ে রায়হানের অস্ত্র কেনার বিষয় জানতে পারেন।
‘প্রথম পিস্তল কেনেন কঙ্কাল বেচে’
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল সন্ধ্যাকে আরও জানিয়েছেন, রায়হান তাদেরকে তার অস্ত্র নিয়ে নানা ঘটনা বলেছেন। জানিয়েছেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় রায়হান অস্ত্র জোগাড় করা শুরু করেন। ওই সময় কঙ্কাল বিক্রি করে প্রথম পিস্তল কিনেছিলেন তিনি।
রায়হানের অস্ত্রটি অবৈধ জেনে সবাই বিস্মিত হন বলে দাবি করেছেন মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিরুল হোসেন।
সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “রায়হানের অস্ত্রের কথা আমরা পরে শুনেছিলাম। এ জন্য শোকজও করা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন, পিস্তলটি লাইসেন্স করা। আমরা তার বক্তব্য যাচাই করিনি। তার উগ্র আচরণের কথা শুনে আসলেও শিক্ষকদের সঙ্গে কখনও তিনি অসদাচরণ করেননি।”
কলেজ ক্যাম্পাসে ডা. রায়হানের অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়টি জানার পরও কোনও ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, “এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেননি। আবার আমি নিজেও দেখিনি। শুধু শোনা কথার ওপর ভিত্তি করে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে চার্জ করা অনৈতিক।
“তারপরও তাকে মৌখিকভাবে বলেছিলাম। তিনি ছাত্রজীবনে ক্যাডার রাজনীতি করতেন, অস্ত্র রাখতেন। চালচলনে উগ্রতা রয়েছে। এ ধরনের মানুষ কখন কার মাথায় পিস্তল ধরে বসবে, তার ঠিক নেই।”
ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে অধ্যক্ষ বলেন, “তার নামে দুটো মামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। দ্রুত এটির প্রতিবেদন জমা পড়বে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।
“রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে যেহেতু ফৌজদারি আইনে মামলা হয়েছে, সেটি প্রমাণিত হলে এবং দুই বছরের সাজা হলে, বিএমডিসির বিধি অনুসারে তিনি তার চিকিৎসক নিবন্ধন হারাবেন।”
পুলিশ কী বলছে
ডা. রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তারের পর তার বাড়ি ও ব্যাগ তল্লাশি করে দুটি সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স বোরের বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, চারটি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি ছুরি ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু পেয়েছে পুলিশ।
এছাড়া রায়হানের কাছ থেকে আইডি কার্ড ও তার ব্যবহৃত ডিজিটাল সিল, গুলির খোসা, মোবাইল ফোন ও লেদারের ব্যাগও জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর রায়হানের মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলের অনেক ছবি পাওয়া গেছে।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বেলাল হোসেনের আদালতে ৬ মার্চ অস্ত্র আইনে করা মামলায় রায়হানের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আগামী সোমবার আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। শিক্ষার্থীর বাবার মামলায় ডা. রায়হান আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এতে তিনি শিক্ষার্থীকে গুলি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আর অস্ত্র আইনের মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। সোমবার আদালত আবেদন মঞ্জুর করার বিষয়টি জানাবে।
ডা. রায়হানের কাছ থেকে জব্দ করা অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “তাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় পেয়েছি। এ সময়ের মধ্যে খুব বেশি কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
“রায়হানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমাদের জানতে হবে। তিনি অস্ত্র কেনাবেচায় জড়িত কি না, তা জানা দরকার। আমরা মূলত তার অস্ত্র সংগ্রহের চ্যানেলটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে আশা করি এসব বিষয় জানতে পারব।”
রায়হানের ছাত্র ও কর্মজীবন
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. রায়হান শরীফ ৩৯তম বিসিএস ক্যাডার।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৭ সালে সিরাজগঞ্জের সবুজ কানন স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন রায়হান। এরপর সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। ওই দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তিনি। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) ৫২তম ব্যাচে ভর্তি হন।
রায়হান এমবিবিএস শেষে ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। তবে কয়েক মাস পর চাকরিচ্যুত হন। ২০২০ সালে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা হিসেবে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন রায়হান। সেখানে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই বছরই শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
রায়হান সিরাজগঞ্জে থাকাকালে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। রামেকে ভর্তির পর ছাত্রলীগে যোগ দেন। রামেক শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতিও ছিলেন তিনি। পারিবারিকভাবে রায়হানের বিয়ে দেওয়া হলেও কয়েক মাস পর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বর্তমানে তার বসবাস শহরের কলেজ রোড এলাকায়।