বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দায়িত্ব পালন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনাদের দায়মুক্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।
রিট আবেদনকারী ১০ আইনজীবী হলেন– আব্দুল্লাহ সাদিক, জিএম মোজাহিদুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, জোবায়দুর রহমান, নোয়াব আলী, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী, সাজ্জাদ সরওয়ার, মোজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক ও একেএম নুরুন নবী।
রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার আইন ২০২২ এর ৯ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এই ৯ ধারায় প্রদত্ত দায়মুক্তি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
৯ ধারায় বলা হয়েছে, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতঃপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।”
রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, এ আইনের ৯ ধারার ফলে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং এ ব্যাপারে বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে, যা সংবিধানের ২৬, ২৭ এবং ৩১ অনুচ্ছেদ, ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
তিনি বলেন, এই আইনের ধারা ৯ এর মাধ্যমে বিচারবিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের কোনও আদালতে প্রশ্ন উত্তাপন করা যাবে না। এই ধরনের দায়মুক্তি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক।
এই আইনজীবী আরও বলেন, দেশের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিভাগ। আইন সভা আইন পাস করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে না। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ৯ ধারার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে।
রিটে আইন মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনকে বিবাদী করা হয়েছে জানিয়ে শিশির মনির বলেন, রিট আবেদনটি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে উত্থাপন করা হবে।