Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মাস্ক-কাশ মুখোমুখি, ট্রাম্প প্রশাসনে বিভেদের লক্ষণ

musk-and-kash-2
[publishpress_authors_box]

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মীরা শনিবার সন্ধ্যায় একটি ইমেইল পায়। যেখানে কর্মীদের গত সপ্তাহে কী কী কাজ করেছে তা ব্যাখ্যা করতে বলা হয়।  

শুধু কাজের ফিরিস্তি চেয়ে ইমেইল পাঠানোই নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, কর্মীরা ইমেইলের জবাব না দিলে তা ‘পদত্যাগ হিসাবে ধরে নেওয়া হবে’।

কড়া ভাষায় কাজের ফিরিস্তি জানতে চাওয়া হলেও নিজের কর্মীদের এই ইমেইলের কোনও জবাব না দিতে বলেছেন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) পরিচালক কাশ প্যাটেল। তাতে প্রশ্ন উঠেছে ট্রাম্প প্রশাসনে কি বিরোধের লক্ষ্মণ দেখা দিচ্ছে?

জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর ট্রাম্প ডিওজিই দপ্তর খুলে তার প্রধান করেন ধনকুবের ইলন মাস্ককে। এরপর ১০ বছরের জন্য এফবিআইয়ের পরিচালকের দায়িত্ব নেন কাশ প্যাটেলকে।

শনিবার দেশটির ফেডারেল কর্মীরা ইমেইল পাওয়ার আগে আগে এক্সে পোস্ট দেন মাস্ক। এর কিছুক্ষণ পরেই ইমেইলটি যায়।

তবে এফবিআইয়ের মতো বেশ কিছু জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি এবং ফেডারেলের অন্যান্য কিছু বিভাগ তাদের কর্মীদের দ্রুততার সঙ্গে এই ইমেইলের জবাব না দেওয়ার কথা বলেছে বলে জানায় সিএনএন। এমনকি প্রশাসনের নির্বাহী শাখা এই বিষয়ে অবগত নয় বলেও জানিয়েছে।

ফেডারেলের কর্মীদের কাছে ইমেইলটি এসেছে অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের মানবসম্পদ বিভাগের নতুন একটি ইমেইল অ্যাড্রেস থেকে। এমনকি সেখানে কোনও স্বাক্ষরও নেই। ইমেইলের বিষয় হিসেবে লেখা রয়েছে, “আপনি গত সপ্তাহে কী করেছেন?”

ইমেইলের কপিতে আরও লেখা হয়েছে, “এই ইমেইলে সম্ভাব্য ৫টি বুলেট আকারে রিপ্লাই করুন গত সপ্তাহে আপনি কী করেছেন এবং আপনার ম্যানেজারকেও সিসি করুন। দয়া করে কোনও গোপন তথ্য, লিংক বা অ্যাটাচমেন্ট পাঠাবেন না।”

সিএনএনের হাতে থাকা চিঠিতে দেখা গেছে, বেশ কিছু এজেন্সির ফেডারেল কর্মীদের এই ইমেইল দেওয়া হয়েছে। কারও কারও কাছে বাড়তি গুরুত্ব বা লাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে ইমেইল পাঠানো হয়েছে।

ফেডারেল কর্মীদের এই ইমেইল পাঠানোর কিছুক্ষণ আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন মাস্ক। সেখানে নির্দেশনা মেনে না চললে চাকরি যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।

শনিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক বলেন, “প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে, ফেডারেলের প্রতিটি কর্মী খুব শিঘ্রই একটি ইমেইল পাবেন, সেখানে বুঝতে চাওয়া হবে তারা গত সপ্তাহে কী করেছেন।”

এর আগে আগে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে দেওয়া আর একটি পোস্টে মাস্ককে আরও ‘আক্রমণাত্মক’ হওয়ার পরামর্শ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পোস্টে তিনি বলেন, “২৩ লাখের শক্তিশালী ফেডারেল কর্মী বাহিনীর আকার কমানো ও ঢেলে সাজানোর প্রচেষ্টায় ডিওজিইর আরও আক্রমণাত্মক হওয়া উচিৎ।”

এই ইমেইল পাওয়ার পর বেশ কিছু এজেন্সি তাদের কর্মীদের জবাব না দিতে বলেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বিশেষ করে সেই সব এজেন্সি যেখানে কর্মীদের কাজ বেশ স্পর্শকাতর।

এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল তার ব্যুরোর কর্মীদের এই ইমেইলের জবাব না দেওয়ার কথা বলেছে। ব্যুরোর কর্মীদের কাছে পাঠানো এক ইমেইলে তিনি বলেছেন, “এফবিআই আমাদের সব রিভিউ প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে। এফবিআই নিয়মমাফিক সব রিভিউ করবে। যখন আরও তথ্য দরকার হবে আমরা প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করব। এখন যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।”  

ইমেইলের জবাব দেওয়ার জন্য সোমবার রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে মাস্কের দপ্তর। মাস্ক মুখে বললেও জবাব না দিতে পারাকে পদত্যাগ হিসেবে ধরে নেওয়ার কথা ইমেইলে লেখা নেই।

তবে কোন আইনি ধারায় জবাব দিতে না পারা ফেডারেল কর্মীদের মাস্ক ছাঁটাই করবেন তা পরিষ্কার নয়। আবার যারা নিজেদের গোপন কাজ বিস্তারিত বলতে পারবেন না, তাদের ক্ষেত্রে কী হবে সেটাও পরিস্কার করা হয়নি ওই ইমেইলে।

তবে মাস্কের কাজের ফিরিস্তি চাওয়া আর কাশের এভাবে প্রতিক্রিয়া না জানাতে বলার মধ্যে মতভেদের লক্ষণ দেখছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত