রংপুরের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে আয়োজিত কনসার্টে শিরোনামহীন, জলের গান, টঙের গান, বায়োস্কোপ ও হৃদয় জেজে অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ব্যান্ড মঞ্চ মাতিয়েছে।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে রংপুর স্টেডিয়াম মেতেছে গত মঙ্গলবার রাতে। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ভেন্যু।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১১তম ব্যাচের ছাত্র রিশাদ কবিরের চিকিৎসায় ‘কনসার্ট ফর রিশাদ’ এর আয়োজন করা হয়। তার দুইটি কিডনিই অকার্যকর হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রিশাদকে সুস্থ করে তুলতে হলে কিডনি প্রতিস্থাপন ও যথাযথ চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। তার পরিবার সংগ্রহ করতে পেরেছিল মাত্র ১০ লাখ টাকা।
রিশাদের চিকিৎসার জন্যই আয়োজন করা হয় ‘কন]সার্ট ফর রিশাদ’। এই কনসার্টে পারফর্ম করে ব্যান্ড শিরোনামহীন, জলের গান, টঙের গান, বায়োস্কোপ ও হৃদয় জেজে অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। টিকেটের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৫০ টাকা।
কনসার্ট শেষে শিরোনামহীনি ব্যান্ড নিজেদের সম্মানীর দুই লাখ টাকাও তুলে দেয়। উপস্থিতির পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা করেছে জলের গানও।
বৃহস্পতিবার কনসার্টের ছবি নিজেদের ফেইসবুক পেইজে প্রকাশ করেছে শিরোনামহীন।
সে সূত্রেই ব্যান্ডের মুখপাত্র ও ভোকাল জিয়া জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, “আমরা অভিভূত, আপ্লুত এমন একটি কনসার্ট করে আসতে পেরে। রংপুরবাসী এভাবে রেসপন্স করবে আমরা ভাবিনি। দারুণ কনসার্ট হয়েছে। রিশাদ সম্ভবত বেঁচে যাবে। এটাই আমাদের কনসার্টের সফলতা। নিঃসন্দেহে একটা দারুণ দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো।”
“আমরা যতদূর জানতে পেরেছি প্রায় পঁচিশ লাখ টাকা এ কনসার্ট থেকে উঠে এসেছে রিশাদের জন্য। প্রয়োজন ছিল সাড়ে ১৫ লাখ টাকার মতো। আমরা খুশি, রিশাদের চিকিৎসা পরবর্তী সময়ের জন্যও কাজে লাগবে টাকাটি।”
চ্যারিটি কনসার্টের সফলতাকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন জিয়া।
তিনি বলেন, “আমরা অসংখ্য চ্যারিটি কনসার্ট করেছি। মনে আছে চিটাগংয়ে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সদ্য বিবাহিত তরুণী তাহমিনার কথা। আমরা পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। দশ লাখ টাকা উঠেছিল সে কনসার্টে। তাহমিনা বেঁচে গিয়েছিল। আমরা দাঁড়ালে মানুষের উপকার হয়। মানুষ বেঁচে যায়। এটা আশীর্বাদ। একে কাজে লাগানো আর্টিস্টের ধর্ম হওয়া উচিত।”
বন্যার্তদের সহায়তায় গত আগস্ট থেকে বিনা পারিশ্রমিকে অনেক কনসার্টে পারফর্ম করছে শিরোনামহীন। জিয়া জানান, শুধু কনসার্টই নয়, বন্যার্তদের সহযোগিতায় ‘গেট আপ স্ট্যান্ড আপ’- নামে শিল্পীদের ব্যানারে প্রায় ছত্রিশ লাখ টাকা সংগ্রহেও ভূমিকা রেখেছেন তারা।