ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ ১৮ জনকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম বেলাল হোসেনের আদালত পুলিশের করা নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আ স ম ফিরোজ, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও লালবাগ জোনের ডিবি পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে যাত্রাবাড়ি থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে যাত্রাবাড়ি থানার তিন মামলায়, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে লালবাগ থানার এক মামলায়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে যাত্রাবাড়ী থানার চার মামলায়, বংশাল থানার এক মামলায় সাবেক এমপি হাজী সেলিমকে, সাদেক খানকে আদাবর থানার এক মামলায়, এবিএম ফজলে করিমকে কোতয়ালী থানার এক মামলায়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে যাত্রাবাড়ী থানার দুই ও শাহবাগ থানার এক মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিমকে যাত্রাবাড়ী, চকবাজার ও বংশাল থানার এক মামলা করে তিন মামলায়, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে যাত্রাবাড়ী থানার পাঁচ, বংশাল থানার দুই ও কোতয়ালী থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানকে একই থানায় করা আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হন এই ১৮ জন। তখন থেকেই কারাগারে রয়েছেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে চিহ্নিত এই ব্যক্তিরা। বিভিন্ন মামলায় তাদের রিমান্ডে নিয়ে নিয়মিত জিজ্ঞাসাবাদও করছে পুলিশ।
নতুন করে রিমান্ড মঞ্জুর হলো যাদের
বুধবার সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীতে নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস হত্যা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
একই আদালত লালবাগের আজিমপুর এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের তিন দিন এবং হাজী সেলিমের ছেলে ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের চারদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
চকবাজারের চানখারপুল এলাকায় রাকিব হাওলাদারকে গুলি করে হত্যার মামলায় সোলায়মান সেলিমের আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে সাইদুর রহমান ইমরান হত্যা মামলায় সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম বেলাল হোসেনের আদালতে আসামিদের হাজির করেছিল পুলিশ। এরপর আনিসুল হকের সাত দিন, কামরুল ইসলামের ১০ দিন, সোলায়মান সেলিমের দুই মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিন এবং আ স ম ফিরোজের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। শুনানি শেষে আদালত বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেয়।
এর আগে, ১৩ নভেম্বর রাতে গুলশানের একটি বাসা থেকে সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। পরদিন রাকিব হাওলাদার হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডসহ আদালতে হাজির করা হয়। তবে মূল নথি না থাকায় সেদিন রিমান্ড শুনানি হয়নি। সেদিনই শুনানির জন্য আজকের দিন ঠিক করা হয়েছিল।
এবার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে গেলেন কামরুল ইসলাম। তবে আনিসুল হক ও জাপা নেতা ফিরোজকে এর আগেও কয়েক দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।