অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, পুলিশের কাজে বাধা ও দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে করা মামলায় ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান’ নামের সংগঠনের অন্যতম সংগঠক মাহবুবুল আলম চৌধুরীসহ ১৮ জনকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই মাহবুবুল আলমের ডাকেই গত রবিবার রাতে সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস, মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে শাহবাগ এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। হঠাৎ করে এই জমায়েত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
পরে সোমবার রাতে মাহবুবুলকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের একটি দল।
মঙ্গলবার মাহবুবুলসহ মামলার আসামিদের ঢাকার মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মাহফজুর রহমান মামলার আসামিদের কারাগাররে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক এই আবেদন মঞ্জুর করেন।
কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন, জিয়াউর রহমান, সৈয়দ ইসতিয়াক আহমেদ, মেহেদী হাসান, রাহাত ইমাম নোমান, মাসুদ, ইব্রাহিম, আলেক ফরাজী, সাইফুল ইসলাম, আবু বক্কর, রিংকু, নিজাম উদ্দিন, সৈয়দ হারুন অর রশিদ, আফজাল মন্ডল, আব্দুর রহিম, নুরনবী, শহিদ ও কোহিনুর আক্তার।
তবে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমীন গেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তাকে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মোস্তফা আমীনকে আদালতে হাজির করতে কাস্টডি ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত সুস্থতা সাপেক্ষে তাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন।
সোমবার সকালে শাহবাগে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশের চেষ্টা করে অহিংস গণঅভ্যুত্থান নামের এই সংগঠনটি। এদের লক্ষ্য ছিল মূলত দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত এনে সেগুলো বিনা সুদে দরিদ্রদের মধ্যে ঋণ দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জনপ্রতি এক হাজার করে টাকাও হাতিয়ে নেয় সংগঠনটি। আর সেই ঋণ সংগ্রহ করতেই দলে দলে মানুষ সমাবেশে যোগ দিতে শাহবাগ আসতে থাকেন।
এই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক হারুন অর রশিদ একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনের ব্যানারে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলে বেআইনী জনতাবদ্ধ হয়ে শাহবাগ মোড়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটায়। আসামিরা শাহবাগ মোড়ে থাকা ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাজে ব্যবহৃত প্লস্টিকের রোড ডিভাইডার ভেঙ্গে অনুমান বিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।