পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চুক্তি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হয়নি, এই চুক্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে হয়েছে।
তাই এই চুক্তির দায় শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের নয়, এই চুক্তির দায় যে সব সরকার আসবে দেশে, সে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে নতুন সরকার এসেছে, আমরা দেখেছি বাংলাদেশের পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিবর্তনের হাওয়া লাগেনি।”
নতুন সরকার কয়েক মাসের জন্য হলেও বাংলাদেশের সরকার। কাজেই পার্বত্য চুক্তির দায়ভার অন্তর্বর্তী সরকারকেও নিতে হবে- বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বর্ষপূর্তিতে রাঙ্গামাটির কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে গণসমাবেশের আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অন্যান্য সংস্কার কমিশন করেছেন, অথচ পার্বত্য সমস্যা বাংলাদেশের জাতীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা, এই সমস্যার এখনও কোনও যথাযথ উদ্যোগ নেননি। অন্তর্বর্তী সরকারকে অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে পার্বত্য সমস্যাকেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে।
গণসমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক উ উইন মং জলির সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- শিক্ষাবিদ শিশির কান্তি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমা, গিরিসুর শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি জয়তী চাকমা ইনু, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অরুণ ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আলোকে ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইনসহ যেসব বিষয়াদি রয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে প্রণীত হয়নি।
চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হলে পার্বত্য অঞ্চলে থাকা সমস্যাগুলোর সমাধান হবে না বরং পাহাড় আরও অশান্ত হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিবিরোধী ও জুম্ম স্বার্থপরিপন্থী সব ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করার দাবি জানান তারা।
