চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখা একটি পণ্যবাহী নৌযান থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো তিন জনের মধ্যে দুজনেরও মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। তবে নিহত একজনের নাম জানা যায়নি।
আহত ব্যক্তির নাম জুয়েল। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হতাহতদের সবার বাড়ি নড়াইল জেলায়।
নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর জোন) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে টেলিফোন পেয়ে তারা এম ভি আল-বাখেরা নামের জাহাজটি থেকে হতাহতদের উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, “জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। সকাল থেকে জাহাজটির মালিক কোনও কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পরে একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজকে আল-বাখেরার খোঁজ নিতে বলেন।
“ওই জাহাজের কর্মীরা মেঘনার মাঝখানে আল-বাখেরাকে নোঙর করা অবস্থায় দেখতে পান। খোঁজ নিতে গিয়ে তারা কক্ষের ভেতরে লাশ দেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে টেলিফোন করে পুলিশকে জানান।”
নৌপুলিশ সদস্যরা গিয়ে পাঁচজনকে মৃত দেখতে পান, তিনজন ছিলেন গুরুতর আহত। তাদের দ্রুত চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান জানান, আহত জুয়েলের শ্বাসনালিও কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সজিবুল ও মাজেদুল নামে যাদের আহত হিসেবে হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাদের আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, “তাদের মাথায় ও শরীরে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।”
নৌ পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, জাহাজে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় এদের হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছে তারা আট জন ছিলেন। ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। ডাকাতি, কিংবা অন্য কোনও কারণ হতে পারে। তদন্ত করার পরে জানা যাবে।”
নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে এই নৌরুটের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থল থেকে ২টি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে জানিয়েছে পুলিশ। এসব ফোনে থাকা কললিস্ট ধরে তদন্ত কাজ চলছে।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নৌযানটির মালিক মেসার্স এইচপি এন্টারপ্রাইজ। এটিতে সার পরিবহন করা হচ্ছিল।