সফল হতে কে না চায়? কিন্তু সফলতার পেছনে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা জরুরি। সফলতা তখনই হাতের মুঠোয় আসবে এবং থাকবে যদি কিছু বিশেষ গুণ ধরে রাখা যায় সব সময়।
মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আট গুণ যদি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তবে জীবনে আপনি অবশ্যই সফল ব্যক্তি বলেই পরিচিত হবেন।
ভুল থেকে শেখা
ভুল ও ব্যর্থতার বিপরীতে নিজেকে বিচার করার ধরনেই বোঝা যায় কতটুকু পরিণত করতে পারলেন নিজেকে। মনোবল হারানোর বদলে যদি ডুবন্ত পরিস্থিতিতেও ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয় নিতে পারেন, তাহলে সফলতা আপনার কাছে ধরা দেবেই।
আর এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির কাছে একবার সাফল্য এলে তা সহজে ছেড়ে যায় না বলে জানাচ্ছে কগনিটিভ সাইকোলজি অর্থ্যাৎ জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা।
ভুল স্বীকার করে নিলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়া সহজ হয়। এতে নিজেকে শুধরে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ মেলে সহজে।
যে কোনো কাজেরই একটি সুস্থ সীমা রয়েছে। আর তা বুঝে চলতে পারাই হলো বিচক্ষণতা। নিজের জন্য সঠিক মনে হচ্ছে না এমন কাজে না বলতে পারলে সফলতার পথে আরও এক কদম এগিয়ে গেলেন।
যারা নিজের সামর্থ ও আকাঙ্ক্ষা বুঝে পা ফেলে তারা কম চাপের মুখে থাকে। এ কারণে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
এতে বোঝা যায়, আপনি নিজেকেও সম্মান করতে শিখেছেন। অর্থ্যাৎ আপনি একজন পরিণত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি।
সমালোচনায় টলে ওঠা নয়
জীবনে যতই সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন, ততই সমালোচনার মুখে পড়তে হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতেও নিজের কাজ ও বিচারবুদ্ধির উপর ভরসা রেখে চলতে পারাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
গবেষণা বলছে, অন্যের কথায় সহজেই বিচলিত না হওয়া ব্যক্তিদের জীবনে মানসিক প্রশান্তি বজায় থাকে। আর এ কারণে তারা নির্দ্বিধায় লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিরা অন্যের কটুক্তিতে নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত থাকতে পারে; এতে নিজের স্বপ্ন আরও খোলাসা হয়ে ওঠে নিজের কাছে।
নিজের যত্ন নেয়া
শত কাজের মধ্যেও নিজের জন্য নিয়মিত কিছু সময় আলাদা করে নেয়ার অর্থ নিজেকে ভালোবাসা। শরীরচর্চা করা, ভালো খাওয়াদাওয়া করা, পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস হলো শারীরিক ও মানসিকভাবে সবল থাকার প্রেরণা।
অনেক গবেষণাই বলছে, নিজেকে নিজেই অবহেলা করলে দিনে দিনে মানসিক অবসাদ, অস্থিরতা, অসুস্থতা বেড়ে যায়।
সফলতা ধরে রাখার সময়কাল দীর্ঘমেয়াদী হলে নিজেকে ওই সময় সুস্থ রাখা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
সময়ের বদল উপলব্ধি করা
গবেষণা বলছে, সময়ের ধরন বুঝে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে জীবনে ঝক্কি কমে আসে অনেকটাই। মানিয়ে চলার এই মানসিকতা ব্যক্তির দৃঢ়তাকেই প্রকাশ করে। আর এমন মানুষ নিশ্চিত ভাবেই সফল হবেন।
সম্ভাবনার খোঁজে থাকা
জীবনে ভালো কিছু পেতে হলে নিজেকে গড়েপিঠে নেয়ার বিকল্প নেই। একটি ভালো বই পড়া, সেমিনারে অংশ নেয়া এবং নতুন কিছু শেখা মানে প্রতিনিয়ত নিজের বিকাশ ঘটার পথ খোলা রাখা।
যারা কিছু না কিছু শেখায় মনোযোগী থাকেন তাদের মানসিক ভাবে সুখী ও সুস্থ বলে জানাচ্ছে গবেষণা।
শেখার প্রবল আগ্রহ ধরে রাখা এবং শিখতে থাকা বলে দেয় সাফল্য ওই ব্যক্তির দোরগোড়ায় কড়া নাড়বেই।
টক্সিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা
যোগাযোগ ও সম্পর্কে বিষবাষ্প ছড়ায় যারা তাদের চিনে নেয়া খুবই জরুরি। ব্যক্তিত্ববানরা তাই এ ধরনের যে কারো সঙ্গ এড়িয়ে চলেন। প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মাত্রই সুস্থ থাকতে সব রকম নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখেন; গবেষকরাও তাই বলছেন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
জীবনে যা কিছু ভালো প্রাপ্তি তা নিয়ে খুশি থাকা উদার মনের পরিচয় রাখে। অনেক গবেষকের পরামর্শ হচ্ছে, এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নিজের মধ্যে আবেগকে নমনীয় রাখে। ফলে সম্পর্ক গাঢ় হয় এবং জীবনে আনন্দ বেড়ে যায় বহুগুণ।
স্পষ্ট চিন্তাশক্তি
কী করছেন এবং কেন করছে এ নিয়ে প্রথমে নিজের কাছেই খোলাসা থাকতে হবে। নিজের মূল্যবোধ ও লক্ষ্য যত স্পষ্ট ভাবে নিজের কাছে ধরা দেবে ততই সমৃদ্ধি আসবে। গবেষণা বলছে, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি জীবনের নানা ধাপে নানা ভাবে সফলতার ছাপ রাখেন।