কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া এলাকা থেকে অপহরণের ২ দিন পরও ৯ জনের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে অস্ত্রের মুখে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে আটজনকে অপহরণ করা হয়। এছাড়া সোমবার রাতে দোকান থেকে অপহরণ করা হয় জসিম উদ্দিন নামে এক দোকানিকে।
বুধবার দুপুর পর্যন্ত অপহৃতদের কোনও ধরনের হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফের শামলাপুরে অটোরিকশা পরিবহনের লাইনম্যান মো. আবদুর রহিম ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা।
এছাড়া অপহরণের একদিন পর বনকর্মীসহ ১৮ জন উদ্ধারের ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
শোভন কুমার সাহা বলেন, “অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে পাহাড়ে অভিযানে রয়েছি।”
অটোরিকশা পরিবহনের লাইনম্যান মো. আবদুর রহিম বলেন, “মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে হোয়াইক্যং-বাহারছড়ার শামলাপুর সড়কে অস্ত্রের মুখে দুটি অটোরিকশা থামায় অপহরণকারীরা। এরপর দুটি অটোরিকশার চালকসহ আটজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।”
অপহৃতদের নাম–পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
সোমবার রাত ১১টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের বড় ডেইল এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করার কথা জানান বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ১৫-২০টি ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে দক্ষিণ বড় ডেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তার মাথা এলাকায় অবস্থিত নিজ দোকান থেকে জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করে। তাকে গহীন পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
“এরপর থেকে তার কোনও ধরনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কোনও ধরনের মুক্তিপণ দাবি করে ফোনও করা হয়নি। এতে করে তার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।”
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর সকালে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া পাহাড়ে বনবিভাগের জমিতে গাছের চারা রোপন করতে গিয়ে বনকর্মীসহ ১৮ জনকে অপহরণ করা হয়। রাতে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ফোন করলে ৩১ ডিসেম্বর বিকালে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএনের অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে আটক করা হয় অপহরণচক্রের দুই সদস্যকে।
এব্যাপারে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেছে বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ নিজেই।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ তথ্য বলছে, এক বছরের বেশি সময়ে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।