Beta
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হলো ‘জঙ্গি আস্তানা’র ৩ বোমা

উদ্ধার করা বোমা খালি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটায় এটিইউ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা বোমা খালি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটায় এটিইউ। ফাইল ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তিনটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করেছে ডিএমপির অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। আস্তানাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যদের বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বরপা এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের চারতলা একটি ভবনকে ঘিরে রাখে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

দুপুর দেড়টার দিকে শুরু হয় অভিযান, চলে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।

অভিযানে ভবনের তিন তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় শক্তিশালী তিনটি বোমা। পরে একে একে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়।

অভিযান শেষে এটিইউয়ের পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন জানান, বিস্ফোরিত বোমাগুলো ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি। অন্য কোথাও বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা থেকে এগুলো এই বাড়িতেই তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়া ওই ভবন থেকে মোড়কে মোড়ানো চাপাতি ও ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনার ধারাবাহিকতা বর্ণনায় তিনি বলেন, “গত ৫ জুন নরসিংদীতে এক অভিযানে একটি রাইফেলসহ একজন জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়। পরে ৯ জুন নেত্রকোনায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়, যেটি ছিল আনসার আল ইসলামের একটি প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে নতুন সদস্যদের বিস্ফোরক তৈরি ও তথ্য-প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো

“এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলে। সবশেষ সোমবার কক্সবাজার থেকে এক নারী জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হন। তিনি নেত্রকোনার ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় আরেকটি জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত হয়।”

এটিইউ জানিয়েছে, চারতলা ভবনটিতে মোট কক্ষের সংখ্যা ২০টি। একটি ফ্ল্যাট দুদিন ধরে তালাবদ্ধ ছিল। আনসার আল ইসলামের দুইজন পুরুষ সদস্য সার্বক্ষনিক এ ফ্ল্যাটে থাকতেন। তাদের মধ্যে একজন নেত্রকোনার জঙ্গি আস্তানাটিতে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন। কয়েকদিন আগে ওই পুরুষদের একজনের স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীও ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন। নারীর সঙ্গে দুটি শিশুও ছিল। তবে অভিযানে তাদের কাউকে ফ্ল্যাটে পাওয়া যায়নি, আগেই তারা পালিয়ে যায়।

বাড়িটিতে বোমা তৈরি হতো জানিয়ে সানোয়ার হোসেন বলেন, ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে তথ্য ও প্রযুক্তিগত কাজ হতো, অন্য কক্ষে আইইডি তৈরির কাজ হতো। ফ্ল্যাটে তিনটি আইইডিসহ এসব তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এসব বোমা উচ্চমাত্রার ও বহনে ঝুঁকি থাকায় বাড়ির বাইরে খালি জায়গায় নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়।

হামলার পরিকল্পনা থেকে এসব বোমা তৈরি করা হচ্ছিল জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “যদি তাদের পরিকল্পনা থেকেও থাকে তা গত কয়েকদিন অভিযানের কারণে ভেস্তে গেছে। ডিভাইসের আকার বড় হলে সাধারণত জঙ্গিরা তা বহন করে। যে আকারের বোমা আমরা পেয়েছি তা দেখে মনে হচ্ছে এগুলো এখানে বানানো হয়েছে।”

অভিযানের আগেই আশপাশের এলাকাসহ ভবনটির বাসিন্দাদের সরিযে নেয় পুলিশ।

অভিযান শুরু পর বোমার বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। এসময় আতংক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। পরে ভবনটি হেফাজতে নেয় পুলিশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত