দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ১১টা থেকে বাকৃবির জব্বারের মোড়-সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা থেকে জামালপুরগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনটি অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর আগে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বাকৃবির কে. আর মার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ভবন ঘুরে জব্বারের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আন্দোলনরত বাকৃবি শিক্ষার্থী ইরান মিয়া বলেন, “আজ থেকে আমরা এক দফা কর্মসূচি পালন করব। সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।”
তিনি বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ দেশের ছাত্র সমাজ দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। আজকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ করে রাখব।”
আরেক শিক্ষার্থী প্রণব ঘোষ বলেন, সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। এই কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পরে এক রিটের প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলেও সেই পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে সরকারের পাশাপাশি আন্দোলনকারী দুজন শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনে আপিল বিভাগ বুধবার সকালেই হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দেয়। যার অর্থ কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন বহাল থাকবে আপাতত।