Beta
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
কোটা সংস্কার আন্দোলন

কুষ্টিয়ায় সহিংসতায় দুই আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার

SS-Kushtia Mehedi hasan-27-7-24
[publishpress_authors_box]

কুষ্টিয়ায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় দুই আওয়ামী লীগ নেতার সন্তানকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্দোলনের সময় মোটরসাইকেল পোড়ানোর ভিডিও দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়।

এরই মধ্যে দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে আটককৃতদের পরিবারের দাবি, তাদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে শামিল করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব ১২) জানিয়েছে, আটককৃতরা হলেন- মেহেদী হাসান ওরফে জিকু (২৬) এবং আশফাকুজ্জামান সৌরভ (১৭)।

জিকুর বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায়। তার বাবা মতিয়ার রহমান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সৌরভের বাবা আনোয়ার পাশা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোল টাকা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। আনোয়ার পাশার চাচা মকবুল হোসেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং মেহেরপুর-২ আসন থেকে দুইবারের নির্বাচিত সংসদ। 

দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে গত ১৭ জুলাই কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মোড়ে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক ও কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন চার-পাঁচশ শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন স্থানীয় ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী।

আন্দোলনকারীদের হামলার মুখে টিকতে না পেরে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা। পরে ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। সে সময় রোহাজ আরেফিন রাব্বি নামে এক তরুণের মোটরসাইকেলও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ১৮ জুলাই এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রাব্বি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানিয়েছে, সেদিনের ভিডিও দেখে দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে কুষ্টিয়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব ১২)।

পরে পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, “আশফাকুজ্জামান সৌরভ ও মেহেদী হাসান জিকুকে আটকের পর থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব। পরে তাদের মোটরসাইকেল পোড়ানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের দাবি, তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে ওই আন্দোলনে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বয়স কম হওয়ায় বুঝতে না পেরে তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেয়।

কুষ্টিয়ার বটতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম বলেন, “মতিয়ার রহমানের ছেলে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। অন্য শিক্ষার্থীদের প্ররোচনায় মেহেদী হাসান কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল।”

সৌরভের বাবা যুবলীগ নেতা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা জানান, তার ছেলে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। শহরের পেয়ারা তলার একটি মেসে থাকতো সে। মেসের বড় ভাইয়েরা তার সন্তানকে ভুল বুঝিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিয়ে যায়।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা ও নাশকতা ঘটিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীরা। তবে কুষ্টিয়ায় নাশকতার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতার সন্তান গ্রেপ্তারের ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, সেদিনের ভিডিও দেখলে এরকম অনেককে শনাক্ত করা যাবে, যারা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সন্তান।

তার দাবি, কুষ্টিয়ায় দল-মত নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত