এক মাসের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে থাকা ১ হাজার ৮৫৬ একক কনটেইনার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় রেলপথের পাশাপাশি সড়ক ও নৌপথে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গত ১৯ জুলাই সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কার্গোভর্তি ট্রেন চলাচলও এসময় বন্ধ থাকে। এর ফলে বন্দরে বাড়তে থাকে কনটেইনারের সংখ্যা।
৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর ১২ আগস্ট থেকে কার্গো ট্রেন চলাচল আবার শুরু হলেও বন্দরে জমতে থাকা কনটেইনার সমস্যার সমাধান হয়নি।
কারণ রেলপথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি রেলওয়ে ওয়াগন চলাচল করে।
এগুলোর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১২০ একক কনটেইনার চট্টগ্রাম থেকে কমলাপুরের ডিপোতে পরিবহন করা যায়। অন্যদিকে জাহাজ থেকে প্রতিদিনই বন্দরে কনটেইনার নামছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর কমলাপুরের ডিপোগামী কন্টেইনার রাখা যায় সর্বোচ্চ ৮৭৬ একক। ধারণক্ষমতার চেয়ে এত বেশি কনটেইনার নিয়ে বিপাকে পড়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
কনটেইনার জমে একপর্যায়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে জটিলতার সৃষ্টি হলে ৪ আগস্ট বিকল্প ব্যবস্থায় পণ্য ছাড়ের জন্য এনবিআরকে চিঠি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রেলপথের পাশাপাশি সড়ক ও নৌপথে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কমলাপুরের ডিপোতে কনটেইনার পরিবহনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসানের সই করা অনুমোদনপত্রে বলা হয়, বন্দরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পণ্যভর্তি ১ হাজার ৮৫৬ একক কনটেইনার ঘোষণা সংশোধন সাপেক্ষে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, কমলাপুর আইসিডি বা কমলাপুরের যেকোনো নৌবন্দরে ছাড় নেওয়া যাবে।
এজন্য কার্গো ঘোষণা সংশোধন করতে হবে অর্থাৎ রেলপথের বদলে আমদানিকারক চাইলে সড়ক ও নৌপথে সেই কনটেইনারভর্তি পণ্য নির্ধারিত গন্তব্যে নিতে পারবেন। তবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এসব কনটেইনার ছাড় নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “যেভাবে আইসিডিগামী কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছিল, তাতে সেগুলো বিকল্প পথে ছাড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
“দেরিতে হলেও রাজস্ব বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমদানিকারকদের মনে স্বস্তি ফিরেছে। এখন আমরা আশা করব, কার্গো সংশোধন আদেশ যেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা দ্রুত অনুমোদন দেন।”