ক্রমাগত বিমান হামলার পর এবার দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই অভিযানের তথ্য এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার মাঝরাতে বিমান হামলার পাশাপাশি হিজবুল্লাহর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার উদ্দেশ্যে স্থল বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করেছে।
ইসরায়েলি রাজনৈতিক নেতাদের অনুমোদনের পরপরই লেবাননে স্থল অভিযান চালাল দেশটির সামরিক বাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, তারা লেবাননে সীমিত পরিসরে অভিযান চালাবে। কিন্তু কতদিন এই অভিযান চলবে, সেবিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি আইডিএফ কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, “লেবাননে দীর্ঘস্থায়ী অভিযান পরিচালনা করার কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। সেখানে কোনও স্থায়ী ঘাঁটিও তৈরি করা হবে না। তবে চলমান এই অভিযান কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।”
তবে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিডিয়া আইডিএফ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তবর্তী অংশে ইসরায়েল একটি ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে চায়।
সোমবার রাতেও বৈরুতের শহরতলীতে একাধিক বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিবিসি জানিয়েছে, বৈরুতে হিজবুল্লাহর একাধিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
আইডিএফ সোমবারই বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। সতর্ক করার কয়েক ঘণ্টা পরেই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আঘাত হানে বৈরুতের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির আইন আল-হিলওয়েহতে।
বিবিসির সাংবাদিক লুসি উইলিয়ামসন জানিয়েছেন, ঠিক কত সংখ্যক ইসরায়েলি সৈন্য লেবাননে প্রবেশ করেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে দুই ডজনের বেশি ট্যাংক লেবাননে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এদিকে লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর ব্যাপারে অনাগ্রহী ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু মঙ্গলবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তকে ফোন করে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ে সমর্থন দেন।
লয়েড অস্টিন ইরানকে সতর্ক করে বলেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান সরাসরি সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে ইরানকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
হিজবুল্লাহপ্রধান শেখ হাসান নাসরাল্লাহ গত শুক্রবার ইসরায়েলি বোমা হামলায় বৈরুতে নিহত হন। ওই ঘটনার পর লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনার রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। হিজবুল্লাহর রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েলও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।