Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

মেয়াদ কত দিন, তা সরকারই ঠিক করবে : ড. ইউনূস

ভয়েস অব আমেরিকা সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে।
ভয়েস অব আমেরিকা সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে।
[publishpress_authors_box]

লক্ষ্য সংস্কার করে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, তা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে সেই কাজ করতে কত দিন লাগবে, তা অন্তর্বর্তী সরকারই ঠিক করবে বলে জানালেন তিনি।

নির্বাচনের দিনক্ষণ দিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামানের এক মন্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। তখন নেওয়া এই সাক্ষাৎকার সোমবার ভয়েস অব আমেরিকা প্রচার করেছে।

ড. ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান বলেছিলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে গত ৮ আগস্ট নতুন সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. ইউনূস বলেছিলেন, দেশবাসী যতদিন চাইবে, ততদিনই তারা ক্ষমতায় থাকবেন।

তার দেড় মাস পর ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দৃশ্যত সেই অবস্থান থেকে সরে এলেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ও নির্বাচন সম্পর্কে সম্প্রতি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তাহলে কি ধরে নেওয়া যায় যে এই সরকারের মেয়াদ ১৮ মাস?

এর উত্তরে ভয়েস অব আমেরিকাকে ড. ইউনূস বলেন, “এটা সরকারের মতামত না। সরকার কখন মেয়াদ ঠিক করবে সেটা সরকারকে বলতে হবে। আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন, তখন সেটাই হবে তারিখ। উপদেষ্টা পরিষদে আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি, কিন্তু এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি।”

বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “মূল লক্ষ্য সংস্কার করা। নির্বাচন দেওয়া। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।”

৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের মাস দেড়েক পর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কেন অনুভব করলেন জানতে চাওয়া হলে ড. ইউনূস বলেন, “দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য। আমরা চেষ্টা করছিলাম, পুলিশকে দিয়ে করার জন্য। সেটাই নিয়ম। পুলিশের মধ্যে মনোবল হারিয়ে গেছে। কারণ মানুষের সামনে গেলে তাদের কটুকথা শুনতে হয়। মাত্র কয়েকদিন আগে তারা ছাত্রদের মেরেছে। তারা দূরে দূরে থাকছে। মানুষের সঙ্গে মিশতে চাচ্ছে না। আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার যে শক্তি ছিল, তা ক্ষয়ে গেল।  

“আমরা যেটা বললাম যে, পুলিশের সবাই তো আর অন্যায় করেনি। যারা অন্যায় করেছে তাদের চিহ্নিত করব, তাদের শাস্তি হবে। বাকিরা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু এটা তো একটা লম্বা প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে হচ্ছে না। ইতোমধ্যে কিন্তু শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে। নানা রকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সমাবেশ হয়েছে।

“বিশেষ করে আমাদের পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের অসন্তোষ দেখা গেল। সেগুলো নিয়ে মনে করলাম যে, এভাবে চলতে দিলে তো এটা বাড়তে আরম্ভ করবে। তখন এ প্রশ্ন উঠল সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার জন্য। তাদের অনুরোধ করলাম। তারা রাজি হলো। তারা বলেছে, ‘আমরা তো আছি। কিন্তু আমাদেরকে তো কেউ পরোয়া করছে না। কারণ আমাদের তো কোনও ক্ষমতা নেই কিছু করার। আমাদের ক্ষমতা থাকলে হয়তো আমাদের তারা গণ্য করবে।’ তখন আমরা তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিলাম, তবে একটা সীমিত সময়ের জন্য। দুই মাসের জন্য আমরা তাদের ক্ষমতা দিলাম।”

আগামী দুই মাসের মধ্যে পুলিশের সেবা যেটা জনগণের জন্য, সেটা ফিরে আসবে আশা করছেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আশা করি, এই সময়ের মধ্যে তারা হয়তো পারবে। তারা দেখছে যে, তারা যে ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না, তার ফলে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এটা তো তাদের জন্য সুখকর বিষয় না যে তাদের দায়িত্ব অন্যজন পালন করছে। মাঝখানে আনসার বাহিনীকে দিয়ে করা হয়েছিল। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। কাজেই এভাবেই আমরা সমাধান করার চেষ্টা করছি।”

ড. ইউনূসের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বে ছিল শিক্ষার্থীরা। এ সরকারেও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক, শিক্ষার্থীরা দেশের নানা ক্ষেত্রে, নানা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীরা দেশ পরিচালনায় কতটা ভূমিকা পালন করছে?

এর জবাবে তিনি বলেন, “তরুণদের হাতেই ক্ষমতা যাওয়া উচিত। এখানে বুড়োদের কোনও কাজ নেই। তারা শুধু ভুল করে গেছে এ পর্যন্ত। তরুণরা এগিয়ে আসুক। তারা দায়িত্ব নিক। তারা ভুল-ভ্রান্তি করবে। সেগুলো সংশোধন করবে। তাদের নেতৃত্বেই তো বড় কাণ্ড হয়ে গেল। কাজেই তাদের অবিশ্বাস করার কোনও কারণ দেখছি না।”

তাহলে কি শিক্ষার্থীরাই দেশ চালাচ্ছে?

উত্তরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “চালানো উচিত বলেছি। চালাচ্ছে বলছি না। তরুণরাই তাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে। আমরা তাদের হয়ে যে ভবিষ্যৎ রচনা করব, সেটা ঠিক হবে না। কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো দুনিয়াতেই তরুণদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া ভালো।”

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এই সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমরা তাদের বলেছি যে, আমরা সুসম্পর্ক চাই। কারণ এটা ভারতেরও দরকার। আমাদেরও দরকার। প্রতিবেশির মধ্যে সম্পর্ক ভালো না হলে কোনও জাতির জন্য তা মঙ্গলজনক হয় না।

“মাঝেমধ্যে কিছু প্রশ্ন এসে যায়, যেখানে সম্পর্কে চিড় ধরে। যেমন, সীমান্তে গুলি করল। বাচ্চা মেয়ে মারা গেল। বাচ্চা ছেলে মারা গেল। এগুলো মনে কষ্ট দেয়। আমরা মনে করি না যে, ভারত সরকার ইচ্ছা করে এগুলো করেছে। যেসব কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে, সেগুলো যাতে আমরা উৎখাত করতে পারি, যাতে এ ধরনের বিষয় না থাকে। নিরাপদে মানুষ নিজের জীবন নিয়ে চলাফেরা করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা। এ ধরনের খুঁটিনাটি বিষয় যাতে ভবিষ্যতে না হয়, সে বিষয়ে আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করি।”

ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে প্রত্যর্পণের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ কী-এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, “এটা আইনগত বিষয়। নিশ্চয়ই আমরা তাকে ফেরত চাইব যেখানেই থাকুন তিনি, যাতে আমরা আইনগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারি।”

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, “আমি নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী আসেননি বলে দেখা হয়নি। কাজেই এটা হলো সার্কে যত দেশ আছে, তাদের সঙ্গে আমরা চেয়েছি সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হোক। তার মানে এই নয় যে, সবকিছু পাল্টে গেছে। 

“একাত্তরের গণহত্যা সেটা পৃথক বিষয়। এটা কীভাবে হবে সেটা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে। কিন্তু সার্ক একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। আমরা চাই এটা শক্তিশালী হোক এবং সেই চেষ্টা আমি করে যাব।”

প্রধান উপদেষ্টাকে ভয়েস অব আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। এরপর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি, যেটা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, সেটা বিনষ্ট করা হয়। ১৫ আগস্ট শোক দিবস বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এনিয়ে সমালোচনা আছে। আবার অনেকে বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারা ফ্যাসিবাদের আইকন হিসেবে দেখে। এ কারণেই ঘটনাগুলো ঘটেছে। দীর্ঘদিন জাতির জনক হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান স্বীকৃত।

এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিককে বলেন, “আপনি পুরনো দিনের কথাবার্তা বলছেন। এর মধ্যে একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। আপনার বোধহয় স্মরণে নেই। আপনি এমনভাবে বলছেন যেন এসব ঘটনা ঘটেই নাই।

“নতুন ভঙ্গিতে যা হচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। কত ছেলে প্রাণ দিল, সেটা নিয়ে আপনার কোনও প্রশ্ন নেই। ছাত্ররা বলেছে, আমরা রিসেট বাটন পুশ করেছি। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে। এখন নতুন ভঙ্গিতে আমরা গড়ে তুলব। দেশের মানুষও তা চায়। এর জন্য আমাদের সংস্কার করতে হবে।”

গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থী এবং ৫ আগস্টের পর পুলিশ হতাহতের ঘটনার তদন্ত ও বিচারের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাওয়া হলে ড. ইউনূস বলেন, “যে যেখানে অপরাধ করেছে, তার বিচার হবে। একটার বিচার হবে, আরেকটার হবে না-এটার বিরুদ্ধেই তো গণঅভ্যুত্থান হলো। কাজেই অপরাধ করলে তার শাস্তি পেতে হবে।”

পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে বর্তমান সরকার উদ্বিগ্ন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমরা সব জায়গায় শান্তি চাই। কোনও কোনও জায়গায় অপারগ হয়েছি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, আমরা ইচ্ছা করে এটা করছি না। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছিল, সেটা দ্রুত সমাধানও করা হয়েছে। এমন না যে, এখনও সেখানে অস্থিরতা চলছে। এমন ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে। ঘটলে সরকারের দায়িত্ব সেটা নিরসন করা। সমাধান করা। মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য নিয়ে আসা, যাতে করে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।”

পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিনের অশান্ত পরিস্থিতি নিরসনে সরকারের পরিকল্পনা প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, “এত বছরের একটা সমস্যা এত অল্প সময়ের একটি সরকার সমাধান করে ফেলবে, এটা আশা করা ঠিক হবে না। বহু বছরের চেষ্টায় শান্তি চুক্তি হয়েছে। সেটা বহাল হচ্ছে না। আবার নতুন করে শান্তি চুক্তি করতে হবে কি না, সেটা দেখতে হবে। সেটা আমাদের সরকার পেরে উঠবে না। নির্বাচিত সরকার এসে সেটা করবে।”

বাংলাদেশে অবস্থান করা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে শরণার্থী মর্যাদা এই সরকার দেবে কি না, সে প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, “এটা তো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো দিয়েছে। ইউএনএইচসিআর সেখানে কাজ করছে বহুদিন ধরে। শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া না হলে ইউএনএইচসিআর তো সেখানে যেতে পারত না। শরণার্থী হিসেবেই তো তারা আছে। তারা আমাদের দেশের নাগরিক তো না।”

নতুন করে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে কী করা হবে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন আছে। তারা যদি আসতে চায়, আমরা আসতে দেব। আমরা তাদের গ্রহণ করব। তারপর যা যা করতে হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আছে। এটা আমাদের একার সমস্যা না। এটা সারা পৃথিবীর দায়িত্ব। যখন মানুষ শরণার্থী হয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে আশ্রয় চায়, আমরা দরজা বন্ধ করে দেব না। এটা হতে পারে না। এটা আইনবিরুদ্ধ কাজ।”

সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে হবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আগের সরকার সব ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেখান থেকে পুনর্জাগরণ করতে হবে। এর জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা কমিশন গঠন করে যাচ্ছি। তার মধ্যে একটি সংবিধান নিয়ে। সামনে আরও কমিশন গঠন করা হবে। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সারাদেশ একমত।

“সংবিধান কীভাবে সংশোধন হবে, সেটা নিয়ে বিতর্ক হবে। কমিশন একটা রূপরেখা দেবে। সেটা নিয়ে সারা দেশে বিতর্ক করার সুযোগ তৈরি করা হবে, যেন রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে এবং সবাই মিলে ঠিক করে যে, এ সংশোধন এখনই করবে নাকি ভবিষ্যতে করবে।

“যে সংবিধান আমাদের আছে, এটা দিয়ে দেশ চলবে না। চললে আবারও একই ঘটনার সৃষ্টি হবে।”

সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এটা আইনি ব্যাপার। সংশোধনে কী দরকার, সে নিয়ে কাজ করছি। আইনসঙ্গতভাবে কীভাবে সেটা হবে, তা পরে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।”

রাজনীতির মূলধারায় ’৭১ এ স্বাধীনতা বিরোধীতাকারী দল বা তাদের উত্তরসূরিরা চলে আসছে বলে মনে করেন ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদ।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সংবিধান বলে, প্রত্যেকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। প্রত্যেকের রাজনীতি করার অধিকার আছে। সেই অধিকার আমার নিশ্চিত করতে হবে।

“সংবিধানের বিধান থেকে আমি বের হয়ে আসতে পারি না। তারা যদি অপরাধ করে, তাহলে শাস্তি পাবে। কিন্তু রাগ করে তাকে দুশমন ভাবতে পারি না। তার অধিকার কেড়ে নিতে পারি না। এটা কোনও রাষ্ট্র করতে পারে না, করলে সেটা অচল রাষ্ট্র হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত