অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং সমান মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরও আয় ও সম্পদ বিবরণী জমা দিতে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্ত্রী বা স্বামীর আলাদা আয় থাকলে তার বিবরণীও জমা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা, ২০২৪’-এ এসব কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর দেশের সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার ঠিক এক মাস পর উপদেষ্টাসহ সমমর্যাদাপ্রাপ্তদের সম্পদের হিসাব দাখিলের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন এল।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার সংখ্যা এখন ২১ জন।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং তাদের সমান মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি যারা সরকার অথবা প্রজাতন্ত্রের কাজে নিযুক্ত, তারা প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সবশেষ তারিখের পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে আয় ও সম্পদ বিবরণী জমা দেবেন। সংযুক্ত ছক পূরণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিবরণী জমা দিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামীর আলাদা আয় থাকলে তার বিবরণীও প্রধান উপদেষ্টার কাছে একই সঙ্গে জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এসব আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রধান উপদেষ্টা তার নিজস্ব বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত পদ্ধতিতে প্রকাশ করবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপনের নিচের অংশে রয়েছে একটি ছক। যেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম ও পদবী, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, টিআইএন নম্বর, করবর্ষ, আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত মোট আয়, কর অব্যাপতিপ্রাপ্ত আয়, দান বা অন্যান্য প্রাপ্তি, সবশেষ আয়বর্ষের শেষ তারিনে নীট সম্পদের পরিমাণ, জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয়সহ বিভিন্ন ঘর রয়েছে। যেগুলো পূরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে।
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। নানা ঘটনা পরিক্রমার মধ্য দিয়ে ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন নোবেলজয়ী ড. ইউনূস।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাবেক সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের নানা দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশ পেতে থাকে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার সংশ্লিষ্টদেরও দায়িত্ব নেওয়ার সময় কী পরিমাণ সম্পদ ছিল তার হিসাব দেওয়ার দাবি উঠতে থাকে বিভিন্ন পর্যায় থেকে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন।