লগ্নজিতা চক্রবর্তী গাইলেন ‘প্রেমে পড়া বারণ’; এরপরও এই গান শুনতে শুনতেই প্রেম আরও চাঙ্গা হয়ে ওঠে অনেকের মনে।
অনেকে রয়েসয়ে প্রেমে পড়লেও, অনেকে কিন্তু প্রথম দর্শনেরই প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে যান। এর নাম অনেকে দেন ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’।
মনস্তত্ত্ববিদরা আজকাল নতুন একটি শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করছেন এই অনুভূতিকে।
এমন অনেকেই আছেন হরেদরে কারও প্রেমে পড়ে যান। তারপর সম্পর্ক বেশি দূর গড়াতে না গড়াতে আসে বিচ্ছেদ। এরপর আবারও একই ভাবে প্রেমের গল্প শুরু হয়।
এমন একাধিকবার ঘটে গেলে এই মানসিক দশাকে বলা হচ্ছে ‘ইমোফিলিয়া’। আর যিনি এতে আক্রান্ত তাকে বলা হয় ‘ইমোফিলিয়াক’।
উচ্চারণে মিল থাকলেও এমন মানসিক আচরণের সঙ্গে কোনোভাবেই হিমোফিলিয়া রোগকে গুলিয়ে ফেলার সুযোগ নেই।
ইমোফিলিয়া শব্দটির সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব নেভাদার মনোবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ড্যানিয়েল জোনস।
একজন ইমোফিলিয়াকের আচরণ কেমন হতে পারে?
এরা আসলে সম্পর্ক ছাড়া থাকা থাকতে পারে না বলে দ্রুত কারও প্রেমে পড়ে যায়। এসময় তারা আগে ও পরের কোনো হিসাব করতেও চায় না।
কারও কারও বেলায় প্রথম দেখায় ‘অমর প্রেম’ ধরনের সম্পর্ক হয়ে গেলেও সবার বেলার এমন জাদু ঘটবে না।
মনোবিদ ড্যানিয়েল জোনস এখানেই ইমোফিলিয়াকদের হুঁশিয়ার করে বলছেন, চট করে প্রেমে পড়া অথবা কাউকে ঠিক মতো না জেনেই সম্পর্কে জড়িয়ে গেলে পরে হাজারো বিপত্তি আসতে পারে জীবনে।
“যদিও এই কথা প্যাথলজি মানে মেডিক্যালি পরীক্ষিত ও প্রমাণিত নয় এখনও, তবে অনেকের ইমোফিলিয়া ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ হয়েও দেখা দিতে পারে।”
অতি আবেগের কারণে সম্পর্কে ভুল ভেঙ্গে বড় ধাক্কা খাওয়ার ঝুঁকি তো আছেই। সম্পর্কে ভরসা ও বিশ্বাসের বাঁধন পোক্ত হওয়ার আগেই অনেকে বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এরপর নিজেদের মাঝে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে গেলে নিজেরাই তা সামাল দিতে পারে না।
অন্যদিকে সঙ্গীকে ঠিকমতো না বুঝে সম্পর্কে জড়িয়ে গেলে একে অন্যের কাছে ভালো থাকতে অনেক কিছু গোপন করতেও দেখা যায়। তারপর এক সময় এসব কারণেই ফাটল ধরে সম্পর্কে।
তাহলে কি প্রেমে পড়াই বারণ?
আচরণে ইমোফিলিয়া দেখা দিলেও তাতে ঘাবড়ে যাওয়াও ঠিক নয়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, আবেগে ভেসে গেলে অনেকেই সুযোগ নেবে।
সুতরাং মন খুলে প্রেমে পড়াকে স্বাগত জানিয়ে মনে রাখুন, একটু সময় নিতে হবে; একটু রয়েসয়ে এগোতে হবে।