Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিষণ্ণ ইঁদুর নিয়ে গবেষণায় যে শিক্ষা পেল মানুষ

Depression feature photo
[publishpress_authors_box]

বিষণ্ণতাকে কখনো কখনো সংক্রামক বলা হয়। একই ছাদের নিচে যারা থাকেন, তাদের নাকি প্রায়ই এমন ঘটে। একজন বিষণ্ণতায় ডুবে গেলে তা নাকি বাড়িতে থাকা অন্য সদস্যদেরও আক্রান্ত করে। কিন্তু কিভাবে এটি ঘটে সেটাই এক রহস্য। সত্যিই কি একজনের বিষণ্ণতায় আরেকজন বিষণ্ণ হয়? নাকি বন্ধু, রুমমেট কিংবা বাড়ির বিষণ্ণ সদস্যের প্রতি এটা সহমর্মিতার প্রকাশ? নাকি শারীরিক কোন ব্যাপার-স্যাপারও আছে।

নতুন এক গবেষণা দাবি করছে, তারা এই রহস্য ভেদ করেছে। আর এই রহস্য ভেদ করতে গবেষণা চালানো হয়েছিল ইঁদুরের ওপর। গবেষণার প্রয়োজনে বিষণ্ণতায় ভোগা এক ইঁদুরের খাঁচায়, বিষণ্ণতায় আক্রান্ত নয় এমন এক ইঁদুরকে পাঁচ সপ্তাহ রাখা হয়। পাঁচ সপ্তাহ পর দেখা যায়, ইঁদুরটির বিষণ্ণতা প্রকাশ পায় এমন আচরণ বেড়েছে। পাশাপাশি বিষণ্ণতা বৃদ্ধির জন্য যে হরমোনটি দায়ী তারও বৃদ্ধি ঘটেছে।

গবেষণাটিকে আরও ফলপ্রসূ করে তুলতে একটি পরিবর্তন আনা হয়। একটি বড় খাঁচার পরিবর্তে এবার একটি স্বচ্ছ দেয়াল দিয়ে বিভক্ত খাঁচার দুই অংশে বিষণ্ণ ইঁদুর ও অপর ইঁদুরকে রাখা হয়। এবার যে ফলাফল পাওয়া যায় তা ছিল বেশ মজার। এবারও ইঁদুরটির কিছু বিষণ্ণ আচরণ চোখে পড়ে, তবে তা আগের বেশ কম। আর এর মাধ্যমে গবেষণাটি এটাই দাবি করে যে বিষণ্ণতা ছোঁয়াচে হয়ে উঠতে শারিরীক স্পর্শ প্রয়োজন।

গবেষণার ফল অনুযায়ী স্পর্শ গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাতে উঠে এসেছে আরও একটি বিষয়। আর সেটি হল, বিষণ্ণতা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য আরেকটি কারণ হলো মানসিক চাপ। তাই এমন অনুমান করা যায়, বিষণ্ণতা সংক্রামক নয়। সংক্রামক হলো চাপ। অনেকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায়ও এমনটা ধরা পড়েছে। মজার ব্যাপার হলো, বিষণ্ণতা সংক্রমণে চাপ দৃশ্যতো কোন ভূমিকা রাখেনা।   

ওই গবেষণায় যখন একই সাথে বিষণ্ণ নয় এবং মানসিক চাপেও ভুগছেনা এমন ইঁদুরকে, মানসিক চাপে ভুগছে অথচ বিষণ্ণ নয় এমন ইঁদুরের সঙ্গে রাখা হয়, তখন ঘটে মজার একটি ঘটনা। তখন দেখা গেল যে, তারা বিষণ্ণ হয়ে পড়ছে না। বরং চাপে ভুগতে থাকা ইঁদুরকে চাপমুক্ত হতে সহায়তা করছে।    

মাথায় রাখা দরকার, ইঁদুর আর মানুষ দুটো আলাদা প্রাণী। ইঁদুরের ওপর করা গবেষণার ফলাফলকে মানুষের জন্য অকাট্য বলে ধরে নেওয়া যাবেনা।

যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, গবেষণার ফলাফল এই দাবি করে না যে বিষণ্ণতায় ভোগা মানুষদের আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত। বরং গবেষণার শেষ নিরীক্ষাটি এই ক্ষেত্রে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। সেটি হলো-স্পর্শ , আলিঙ্গন কিংবা কারও হাত মমতার সাথে ধরা আসলেই সহায়ক। এগুলো চাপ এবং বিষণ্ণতা দুটোই কমাতে সহায়তা করে। সুতরাং, স্পর্শ  শুধুই সংক্রামক নয় বরং এটি আমাদের চারপাশের মানুষের জীবনকে ভালো রাখার একটি উপায়ও বটে।    

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত