Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

আরও চড়েছে কাঁচামরিচ ডিম বেগুন ইলিশের দাম

ss-hilsha-brinjal-bazar-kitchen-market-041024
[publishpress_authors_box]

কাঁচাবাজারে যেসব সবজির দাম বেশি বেড়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে চড়া বেগুন। আরও চড়েছে কাঁচামরিচ ও ডিমের দামও।

কিন্তু কেন? বিক্রেতাদের অনেকে বলছেন, বৃষ্টির কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। কেউ বলছেন, দুর্গোৎসব ঘিরে বেড়েছে ইলিশ ও বেগুনের চাহিদা।

তাই বলে দাম এত চড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা।

শুক্রবার ঢাকার বাজারগুলোতে সবুজ রঙের গোল বেগুন প্রতিকেজি ১৪০-১৬০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ ধরনের বেগুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০-৬০ টাকা। গত সপ্তাহে সবুজ রঙের বেগুনের কেজি ছিল ৮০-১০০ টাকার মধ্যে।

বেগুনের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কামরুল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বৃষ্টিতে সব সবজিরই দাম বাড়তির দিকে। এর মধ্যে বেগুনের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

“ইলিশ মাছের সঙ্গে অনেকেই বেগুনের তরকারি খেতে পছন্দ করে। এখন ইলিশের মৌসুম চলছে। এ কারণেও বেগুনের দাম বাড়তে পারে।”

তবে দাম বৃদ্ধির পেছনে খুচরা বিক্রেতাদের হাত নেই দাবি করে ওই বিক্রেতা বলেন, “পাইকাররা বাড়তি দাম নিচ্ছে বলেই আমাদের খুচরা পর্যায়ে বেশি দাম রাখতে হচ্ছে।”

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে মা ইলিশ মাছ ডিম পাড়ার জন্য বেশি স্রোত থেকে কম স্রোতের পানিতে আসে। ফলে এই সময়ে পদ্মা-মেঘনা নদীতে অনেক ইলিশ মাছ ধরা পড়ে।

তবে মাছের প্রজননের সুবিধার্থে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে টানা ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার আগে মাছ ধরার তোড়জোড় দেখা যায়। তাছাড়া ভারতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই হাজার টনের বেশি ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে।

ফলে বর্তমান সময়টাতে দেশের বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত দামের কারণে তা সবার হাতের নাগালে নেই বলে জানান ক্রেতারা।

শুক্রবার ঢাকার নর্দার মোড়ল কাঁচাবাজারের বাজার করতে আসা আমিরুল ইসলাম বলেন, “বাজারে যে দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে, সেই দামে সব শ্রেণির ক্রেতা এই মাছ খেতে পারবে না। ইলিশের কারণে বেগুনের দামও বেড়েছে।” 

বাজারে এক কেজি আকারের একেকটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজির একটু বড় আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। দেড় কেজি আকারের ইলিশ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা কেজি দরে।

রামপুরা কাঁচাবাজারের বিক্রেতা রকিবুল ইসলাম বলেন, “লম্বা বেগুন স্বস্তা আছে। কিন্তু ক্রেতারা এখন গোল বেগুন চাচ্ছে বেশি।”

বাজারে বর্তমানে বেগুনি রঙের লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।

দাম বেড়েছে অন্যান্য সবজিরও

ঢাকার বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢেঁড়শ ও পটলের কেজি ৮০ টাকা। গত সপ্তাহে এই সবজিগুলো ৭০টাকার মধ্যে এক কেজি পাওয়া গেলেও এ সপ্তাহে বাড়তি ১০ টাকা করে ব্যয় করতে হচ্ছে।

বাজারে উচ্ছে ও করোলা ১২০ টাকা করে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই দামে বিক্রি হচ্ছে উচ্ছে ও করোলা। সপ্তাহ দুয়েক আগে উচ্ছে ও করোলার কেজি ছিল ৮০-১০০ টাকার মধ্যে।

পেঁপে গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি। এই সপ্তাহে পেঁপেঁর দাম সামান্য বেড়ে ৩৫-৪০ টাকায় উঠে এসেছে।

তবে ধুন্দল, চিচিংগা ও ঝিঙ্গে আগের মতোই ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি। বরবটি প্রতিকেজি ৮০-১০০ টাকা, লতি ৭০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১৪০-১৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০-৯০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে শীতের সবজি শিম আগাম পাওয়া যাচ্ছে, যা কিনতে কেজিতে ২৪০-২৬০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এছাড়া বারোমাসি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।

সপ্তাহ দুয়েক ধরে মিষ্টি কুমড়ার দামও বাড়তি। এক ফাঁলি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। যার ওজন প্রায় ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই পরিমাণ মিষ্টি কুমড়া কিনতে ক্রেতাদের ব্যয় করতে হতো ৩০-৪০ টাকা।

একটি ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

এক আঁটি লালশাক ২০ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০-৪০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ৩০ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়।

কাঁচামরিচের দামও বেড়েছে

শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে কাঁচামরিচের কেজি ৩২০-৩৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বেশিরভাগ ক্রেতা ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ কেনেন, দাম ছিল ৮০-৯০ টাকা। গত সপ্তাহে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ কিনতে ক্রেতাদের ব্যয় করতে হয় ৬০-৭০ টাকা। সেই হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ৮০-১২০ টাকা বেড়েছে। 

এছাড়া প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৮০-৩০০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

ডিমের ডজন ১৭০ টাকা

গত মঙ্গলবার পর্যন্ত হালকা বাদামি রঙের এক ডজন মুরগির ডিমের দাম ছিল ১৬৫ টাকা। বুধবার থেকে সেই ডিমের দাম বেড়ে হয় ১৭০ টাকা ডজন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সে অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে ডিম বিক্রি হওয়ার কথা প্রতিটি ১১ টাকা ৮৭ পয়সায়। অথচ প্রতিটি ডিমের বাজার দর প্রায় ১৫ টাকা।

সেই হিসেবে এক ডজন ডিমের জন্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে প্রায় ২৮ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

এছাড়া ফার্মের মুরগির সাদা রঙের ডিমের ডজনও অধিকাংশ বাজারে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গত সপ্তাহে সাদা ডিমের ডজন ছিল ১৫৫-১৬০ টাকা। এ ধরনের ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে ৫-১০ টাকা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত