Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন : এখন পর্যন্ত নিহত ৭৩৭, আহত ২২৯০৭

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৭৩৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৯০৭ জন আহত হওয়ার খবর জানা গেছে। তবে এখনও এ তালিকা চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি একথা বলেন।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “গণআন্দোলনে নিহত এবং আহতদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসে (ম্যানেজমেন্ট অব ইনফরমেশন সিস্টেম) হালনাগাদ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৭৩৭ জন নিহতের তথ্য রয়েছে এবং এগুলো যাচাই করা হচ্ছে।”

জুলাইয়ের গণআন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা করার জন্য স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কমিটি প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানায়। সেই তালিকা চূড়ান্ত নয় বলেও জানায় তারা।

সেই তালিকা প্রসঙ্গে নূরজাহান বেগম বলেন, “ছাত্রদেরও কিছু তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে, সেগুলো আমরা সমন্বয় করছি।

“তাদের তালিকা আমাদের কাছে এলে আমরা দেখব। কারণ কোনও ক্ষেত্রে ওভারল্যাপিং হতে পারে। সব যাচাই করে আসল তালিকা পাওয়া যাবে।”

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর তা সহিংসতায় গড়ায় দুই সপ্তাহ পর।

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের পিটুনির শিকার হয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরদিন তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ হলে সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা হামলা চালালে ছয়জন নিহত হয়।

এরপর আন্দোলন যেমন তীব্র হয়, সরকারের দমন-পীড়নও বাড়ে। কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পর আন্দোলনের তোড়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে।

সেপ্টেম্বরের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৬ শতাধিক নিহত হওয়ার একটি প্রাথমিক হিসাব দিয়েছিল। তবে আহত অনেকে পরে মারা যায়, আবার অনেক মৃত্যুর তথ্যও সেখানে ছিল না।

সরকারের পতন হলে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও শহীদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার উদ্যোগ নেয়। সেজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়। সেই কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা এবং আহত-নিহতদের একটা প্রাথমিক তালিকা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে বলে জানান নূরজাহান বেগম।

মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা তালিকা সর্বসাধারণের যাচাইয়ের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে ডাটাবেইজ তৈরির সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

আহত-নিহতদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যারও মুখোমুখি হয়েছে মন্ত্রণালয়।  নূরজাহান বেগম বলেন, “সেই সময়ে অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। কারও কারও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পোস্টমর্টেম করতে হবে, পুলিশ কেইস করতে হবে বলা হয়েছিল।

“ফলে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে বা ভয়ে মৃতদেহ নিয়ে চলে গিয়েছে। আবার অনেকে ভয়ে পরিবারের ঠিকানাও ভুল দিয়েছিল। ফলে সেই ভুল ঠিকানাতে গিয়েই কমিটিকে কাজ করতে হয়েছে। সেসব ঠিকানা এখন ভেরিফাই করতে হয়েছে।”

তবে এখন পর্যন্ত যে তালিকা মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে তা ভেরিফাই করা বলেই জানান উপদেষ্টা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটির তালিকা পেলে তা জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জনদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা সেগুলো ভেরিফাই করলে নিশ্চিত করা যাবে মোট আহত এবং নিহতের সংখ্যা।

আহতদের সঠিত তালিকা নিশ্চিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সবার তথ্য যাচাই করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “৩৫ জন এরই মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছে, ২২ জন কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের তালিকায় আছেন। তবে এই সংখ্যাও কিছুটা বাড়তে পারে।”

আহতদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন চোখে আঘাত পেয়েছিলেন, তারা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অনেকের হাত পা কাটা গেছে তাদেরও আহতদের তালিকায় আনা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের নামের তালিকা করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে সে তালিকার তথ্য সংশোধন-সংযোজনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানিয়েছিল তখন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত