কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিখোঁজ হওয়ার ১৪ দিন পর স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের (৫০) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা তার মরদেহ উদ্ধার করে।
পেকুয়া সদরের মাতব্বরপাড়ার প্রয়াত বজল আহমদের ছেলে আরিফ পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তার মরদেহ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাকে অপহরণে জড়িত সন্দেহে কয়েকশ মানুষ পেকুয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা কিছু সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
নিহত স্কুল শিক্ষকের স্ত্রী মেহেবুবা আনোয়ার লাইজু বলছেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে পেকুয়া চৌমুহনী থেকে বাড়ি ফিরছিলেন আরিফ। পথে ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনে থেকে ৮-৯ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
অপহরণের পর আরিফের স্ত্রী লাইজু চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জমির বিরোধ নিয়ে তাদের কোণঠাসা করতে তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তার শাশুড়ির মুঠোফোনে কল করে আরিফকে জীবিত ফিরে পেতে প্রথমে ২০-২৫ লাখ টাকা দাবি করে। দ্বিতীয় দফায় ৩৫-৬০ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লাইজু দাবি করেন, বেশি টাকা না থাকায় স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে ‘নগদ’ এর মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দেন। থানাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে এসব অভিযোগ করার দাবিও জানান তিনি।
পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন অপহৃত থাকার পর শুক্রবার নিজ বাড়ির পুকুরে থেকে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে স্কুলশিক্ষক আরিফের।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীরের বাড়িতে উত্তেজিত জনতার আগুন ধরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাকে অপহরণে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জড়িত ছিলেন সন্দেহ করা হচ্ছে। এ সন্দেহ থেকে উত্তেজিত জনতা তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে চাঁদপুর থেকে আটক করা হয়েছে। শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও জানান ওসি।