আইনি, প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসাবে শপথ নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন। কিন্তু তিনি এই পদে থাকতে পারবেন ১৩ মাস। এই সময়টুকুই কাজে লাগাতে চান বলে জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা।
২০২১ সালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে গিয়ে কারচুপির অভিযোগ তুলে মামলা ঠুকেছিলেন শাহাদাত। সরকার পরিবর্তনের পর সেই মামলায় জিতেছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণার পর রবিবার ঢাকায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছ থেকে মেয়র হিসাবে শপথ নেন শাহাদাত।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছে ৬ নভেম্বর মেয়য়ের দায়িত্ব নেবেন তিনি। আর এটাই হবে জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার যাত্রার শুরু।
এদিকে শপথের পরই মেয়র শাহাতাদের মেয়াদ কতদিন হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ ধরা হয় নির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর।
সে হিসেবে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর মেয়র হিসাবে আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম চৌধুরী প্রথম সভা করেন সেই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত হবে তার মেয়াদ। সে হিসেবে ২০২৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন শাহাদাত।
সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে ডা. শাহাদাতের শপথের দিন পর্যন্ত ৩ বছর ৮ মাস অতিবাহিত হয়েছে। সে হিসাবে তার মেয়াদ বাকি থাকে ১৬ মাস।
কিন্তু ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইনের অনুমোদিত সর্বশেষ খসড়া অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের (৯০ দিন) মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে। সে হিসেবে ১৬ মাসের মেয়াদ কমে ১৩ মাসে নামবে। অর্থাৎ বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তিনি এক বছরের কিছু বেশি সময় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
তার মেয়াদ নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, আইনে যেটা আছে, সেভাবেই তার মেয়াদ নির্ধারিত হবে।
শপথ নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাতও বলেছেন, “মেয়াদ নিয়ে আমি ভাবছি না। যেই সময় আছে, সেটাকেই সঠিকভাবে কাজে লাগাতে চাই।”
বর্তমানে চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলররা নেই। ফলে নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তা সামাল দিতে সেই আমলাদের ওপরই নির্ভর করেছে সরকার। এজন্য বিকল্প হিসেবে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের দিয়ে ১৭ জনের একটি কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৯ আগস্ট দেশের সব সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে। সেখানে বিভাগীয় কমিশনারদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে শাহাদত মেয়র পদে শপথ নেওয়ায় দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে এখন শুধু চট্টগ্রামেই মেয়রের চেয়ারে জনপ্রতিনিধি রয়েছে।