Beta
বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

শেষ বেলায় ট্রাম্পের রাজ্যে কমলার হানা

Kamala harris and Donald Trump
[publishpress_authors_box]

আয়ওয়া রাজ্যে গত দুটি নির্বাচনেই জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজ্যটিতে ইলেকটোরাল ভোট বেশি নয়, মাত্র ছয়টি। তা যে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে, তেমনও নয়। কিন্তু রাজ্যটিতে ভোটের ঠিক আগের জরিপ রিপাবলিকান প্রার্থীর কপালে ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট।

রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় ভোটের আগে আয়ওয়ার সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের এই রাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস।

শনিবার প্রকাশিত এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৭ শতাংশ বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসকে দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চাইছেন। আর ৪৪ শতাংশ ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউজে ফেরানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন।

জরিপটি চালিয়েছে আয়ওয়ার ডে মোয়েন শহরের স্থানীয় দৈনিক ডে মোয়েন রেজিস্টার। রয়টার্স জানিয়েছে, গত অক্টোবরের ২৮-৩১ তারিখ পর্যন্ত ডে মোয়েনের ৮০৮ জন ভোটারকে নিয়ে জরিপটি চালানো হয়।

জরিপ নিয়ে ডে মোয়েন রেজিস্টারের ভাষ্য, নারী ভোটার বিশেষ করে বয়স্ক ও রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নারীরা শেষ মুহূর্তে ট্রাম্পকে ছেড়ে হ্যারিসের দিকে ঝুঁকেছেন।

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ ছিলেন একজন নারী। আয়ওয়ায় সেবার হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে ৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প।

এরপর ২০২০ সালের নির্বাচনে এই রাজ্যে প্রতিপক্ষ জো বাইডেনের থেকে ৮ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছিলেন ট্রাম্প। সেবার অবশ্য প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি তিনি।

আয়ওয়ার সংবাদপত্রের করা এবারের জরিপকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না ট্রাম্পের প্রচার শিবির। তারা বলছে, ডে মোয়েন রেজিস্টারের করা জরিপের ফল ‘ব্যতিক্রম’। বরং একই দিন ইমারসন কলেজ পোলিং সেন্টারের করা এক জরিপ থেকে আয়ওয়া অঙ্গরাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বোঝা যায়।

নভেম্বরের ১-২ তারিখে চালানো ওই জরিপে ট্রাম্প পক্ষে ছিল ৫৩ শতাংশ ভোট। তার চেয়ে ১০ শতাংশ পয়েন্ট পেছনে ছিলেন কমলা হ্যারিস, তার পক্ষে সমর্থন ছিল ৪৩ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাজ্যগুলোর ইলেকটোরাল ভোটে নির্বাচিন হয় প্রেসিডেন্ট। ৫১টি রাজ্যের (ওয়াশিংটন ডিসিসহ) মোট ইলেকটোরাল ভোট ৫৩৮টি। এর মধ্যে যিনি ২৭০ কিংবা তার বেশি ইলেকটোরাল ভোট নিশ্চিত করতে পারবেন, তিনিই হবেন বিজয়ী।

রাজ্যগুলোতে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ঠিক করা আছে। যে রাজ্যে যিনি বেশি ভোট পাবেন, তিনিই ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পাবেন।

সবচেয়ে বেশি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৪টি। ট্রাম্প কিংবা কমলা ওই রাজ্যে যিনি বেশি ভোট পাবেন, ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোটের সবগুলোও তিনি পাবেন। এক্ষেত্রে কেউ এক ভোটে বিজয়ী হলেও ৫৪ ইলেকটোরাল ভোটের সবক’টি পাবেন।

বেশি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে, এমন রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- টেক্সাস (৪০), ফ্লোরিডা (৩০), নিউ ইয়র্ক (২৮), পেনসিলভেনিয়া (১৯), ওয়াইহো (১৭), মিশিগান (১৫), ভার্জিনিয়া (১৩)।

সবচেয়ে কম ৩টি করে ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে আলাস্কা, ওয়াশিংটন ডিসি, ওয়াইমিং রাজ্যে।

কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা সংগীতশিল্পী বিয়ন্সে।

জাতীয় জরিপে কে এগিয়ে

নভেম্বরের ৫ তারিখে ভোটের আগে করা প্রায় সব জরিপ বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি। তাতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র কি ইতিহাসে এই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে, নাকি প্রেসিডেন্ট হিসাবে দুইবার অভিসংশিত ট্রাম্প ইতিহাস গড়ে আবার বিজয় হচ্ছেন, জরিপ বিশ্লেষণ করে তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চালানো বিভিন্ন জরিপের গড় ফলাফল বলছে, জুলাইয়ের শেষে লড়াইয়ের ময়দানে নামা হ্যারিস ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে আছেন।

নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহগুলোতে সমর্থনের দিক দিয়ে হ্যারিসের পাল্লা ছিল ভারী। গত আগস্টের শেষে ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন তিনি।

পরের মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বরজুড়ে এবং অক্টোবরের শুরুতে এই অবস্থান ধরে রেখেছিলেন এই ডেমোক্রেট প্রার্থী। তবে অক্টোবরের শেষ কয়েক সপ্তাহে হ্যারিসের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে যেতে দেখা যায়।

পেনসিলভেনিয়ায় ডোনান্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বক্তব্য রাখছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে কে জিতছে

যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হচ্ছে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিন।

অন্য ৪৪টি রাজ্যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের ভোটের হার মোটামুটি একই থাকে। কিন্তু এই সাতটি রাজ্যের ভোটের চিত্র বদলায় বলে এগুলোকে ‘সুইং স্টেট’ বলা হয়।   

এই সাত রাজ্যে জরিপের গড় ফলাফলে হ্যারিস ও ট্রাম্পের মধ্যে ব্যবধান এতটাই কম যে কে এগিয়ে তা বলা মুশকিল।

গত জুলাইয়ের শেষে হ্যারিস প্রতিযোগিতায় নামার পর দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে দুই প্রার্থীর সমর্থন ওঠানামা করতে দেখা যায়।

গত আগস্টের শুরু থেকে আরিজোনা, জর্জিয়া, নেভাডা ও নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থন কয়েকবার কম-বেশি হতে দেখা গেছে। তবে এ মুহূর্তে এই চার অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।

বাকি ‍তিন দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিনে গত আগস্টের শুরুতে এগিয়ে ছিলেন হ্যারিস। এসব অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের চেয়ে কখনও কখনও দুই বা তিন পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন তিনি।

তবে পেনসিলভেনিয়ায় ভোটের আগ মুহূর্তে খুবই অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত