সাড়ে তিন মাস পর উপদেষ্টা পরিষদের কলেবর বাড়ার পাশাপাশি তিন উপদেষ্টাকে সহায়তার জন্য তিনজন বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ সহকারীরা হলেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক খোদা বকশ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।
রবিবার নতুন তিনজন উপদেষ্টা বঙ্গভবনে শপথ নেওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তিনজন বিশেষ সহকারী নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হয়।
বিশেষ সহকারী তিনজনই প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পাবেন এবং তাদের বেতন-ভাতাও এই পদমর্যাদা অনুযায়ী হবে।
এদের মধ্যে খোদা বকশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেযেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
ডা. সায়েদুর রহমান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের বিশেষ সহকারী হিসাবে কাজ করবেন।
অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হচ্ছেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বর্তমানে উপদেষ্টা রয়েছেন ২৪ জন।
মাহফুজ আলম বিশেষ সহকারী থেকে উপদেষ্টা হওয়ায় এখন বিশেষ সহকারী থাকছেন চারজন। নতুন তিনজনের আগে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসাবে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ। তিনি উপদেষ্টার মদমর্যাদায় রয়েছেন।
নতুন বিশেষ সহকারীরা
খোদা বকশ চৌধুরী
খোদা বকশ চৌধুরী ২০০৬ সালের নভেম্বরে পুলিশ মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে তার ওই দায়িত্বের অবসান ঘটে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় যে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা দণ্ড পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে খোদা বকশও একজন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার দায়ে তার তিন বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছিল। সাজা খেটে বেরিয়ে আসেন তিনি।
ডা. সায়েদুর রহমান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য পদে নিয়োগ পান ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক। এর আগে তিনি বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি বিএসএমএমইউর ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) সেলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। সায়েদুর রহমান ছাত্রজীবনেই সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ন্যাশনাল ফার্মাকোভিজিল্যান্স গাইডলাইন প্রণয়নকারী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম
অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০১৮ থেকে আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ মেডিকেল ফিজিক্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।