বাংলাদেশ নিজেদের মাঠেও শুরু থেকে চাপে। কিংস অ্যারেনায় মালদ্বীপের বিপক্ষে শুরুতে ওই এক গোল খেয়ে বাংলাদেশ আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি অনেক চেষ্টা করেও। শত সুযোগ তৈরি করেও রাকিবরা পারেননি বলটা জালে জড়াতে।
১৮ মিনিটে গোল হজম করে স্বাগতিকরা। সেটপিসে কীভাবে নবীশের মতো রক্ষণ অরক্ষিত রাখেন তপুরা ! তারই মূল্য দিতে হয়েছে হামজার ফ্রি-কিকে। একেবারে আনমার্কড থাকা আলি ফাসির হেডে গোল করে এগিয়ে নেন মালদ্বীপকে। কিছুই করার ছিল না বাংলাদেশি গোলরক্ষক মিতুল মারমার।
গোলের পর বাংলাদেশ আক্রমণে উঠেছে, খেলায় ফিরতে মরিয়া হয়েছে। তবে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল প্রকট। পারছে না নিখুঁত পাস সতীর্থকে দিতে, বল নিজেদের পায়ে রেখেও পারছে না নিশ্চিন্তে খেলতে। এর মধ্যে কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও বেশিরভাগই বিফলে গেছে নিজেদের ব্যর্থতায়।
সবচেয়ে ভাল সুযোগটা ছিল ৩৩ মিনিটে। মালদ্বীপের বক্সের মাথায় মোরসালিনের বাড়ানো বলে রাকিব বডি ডজে শটের জন্য ভাল জায়গাও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু মালদ্বীপের এক ডিফেন্ডার শুয়ে পড়ে তার শট ঠেকিয়ে বাংলাদেশের একটি দারুন সুযোগ নস্যাৎ করে দেন।
দুর্ভাগ্যের আরেকটি নমুনা হলো, ৪৪ মিনিটে সোহেল রানার অমন গোলার মতো এক শট মালদ্বীপের পোস্ট কাঁপিয়ে হতাশায় মুড়িয়ে দেয় পুরো স্টেডিয়াম। এই ম্যাচে অভিষিক্ত কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী মিডফিল্ডার কাজেম শাহও পড়েছেন এই দুর্ভাগ্যের কবলে।
বিরতির পর যেন নতুন বিভীষিকা! কয়েকটি কাউন্টার অ্যাটাকেই আবার কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। ৫৫ মিনিটে কাউন্টারে নাইজ হাসান বাংলাদেশের ফাঁকা রক্ষণে হানা দিয়েছিলেন। বক্সে ঢোকার আগেই ঈসা ফয়সাল টেকটিক্যাল ফাউল করে আরেক গোলের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। মিনিট সাতেক বাদে সেরকমই আরেকটি কাউন্টার অ্যাটাকে হামজাকে রুখে দেন রাকিব। বাংলাদেশি এই ফরোয়ার্ড এত চমৎকার ট্যাকল করেছেন যা হতে পারে ডিফেন্ডারের জন্য এক আদর্শ উদাহরণ।
ম্যাচের ফল ড্র কিংবা স্বাগতিকরা জিতলে এই রাকিবই হতেন ম্যাচ সেরা। ডানদিকে এই উইঙ্গার দুর্দান্ত খেলে রীতিমত ত্রাস সৃষ্টি করেন প্রতিপক্ষের রক্ষণে। তার প্রতিটি দৌঁড় বিপদে ফেলেছে প্রতিপক্ষকে। আর স্বাগতিকদের সম্ভাবনা জাগিয়েছে। ওই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারলে বাংলাদেশ এই ম্যাচে ৩/৪ গোল করে জিততেও পারতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের পরিণতি শূন্য হাতে ফেরা। হতাশায় মুখ লুকিয়ে মাঠ ছাড়া।
৮৬ মিনিটে রাকিবের বানিয়ে দেওয়া বলে মোরসালিনের শট সেভ করেন মালদ্বীপ গোলরক্ষক। চার মিনিট বাদে এই উইঙ্গার নিজেই গোল করার জায়গায় পৌঁছেও পরাস্ত করতে পারেননি গোলরক্ষককে। এরপর যোগ করা সময়েও আরো দু-দুটো গোলের সুযোগের একটি অন্তত কাজে লাগাতে পারলে এতটা হতাশ হতে হয় না। ৯৩ মিনিটে মোরসালিনের কর্ণার কিকে রাকিবের ডান পায়ের ফ্লিকটি দূরের পোষ্ট ঘেঁষে যায় বাইরে। তিন মিনিট বাদে পোস্টের সামনে মোরসালিনের বাড়ানো বলে টোকা দিতে ব্যর্থ সতীর্থরা।
ছেলেদের ফুটবলে এই গোল মিসের মিছিল দেখতে দেখতেই শুরু হয়েছে নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়ালের নতুন বাফুফে অধ্যায়।