বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা একটি মামলা বাতিল করেছে হাই কোর্ট। আট বছর আগে একটি ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানায় এই মামলা করা হয়েছিল।
মামলাটি বাতিল চেয়ে করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
২০১৬ সালের অক্টোবরে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ নামে খোলা একটি ফেইসবুক পাতা থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ছবিও আসে ওই ফেইসবুক পাতায়।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন বিভিন্ন স্থানে ইরাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগ করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন।
পরে আদালত বোয়ালখালী থানার ওসিকে অভিযোগটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন- ২০০৬ এর (সংশোধিত ২০১৩) ৫৭ ধারায় মামলা হিসেবে গ্রহনের নির্দেশ দেয়। অভিযোগে বলা হয়, ইরাদ সিদ্দিকী একা এই বক্তব্য দিতে পারেন না। নিশ্চয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই তিনি এ বক্তব্য ফেইসবুকে দিয়েছেন।
পরে এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান হাই কোর্টে একটি আবেদন করেন। আদালতে তাদের আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
আদালতের রায়ের বিষয়ে তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মামলাটি রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্য করা হয়েছিল।একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছিল। দল যেন নির্বাচন না করতে পারে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানে না পারে, এ উদ্দেশ্য মামলা করা হয়েছিল।
“আদালত শুনানি গ্রহণ করে দেখেছেন যে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। যে কারণে এটি বাতিল করে রায় দিয়েছেন।”
এ্যানির ৬ মামলা বাতিল
এছাড়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে নাশকতা ও ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের হওয়া ছয়টি মামলা বাতিল করেছে হাই কোর্টের একই বেঞ্চ।
আইনজীবী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী জানান, ২০১০ সালে এ্যানির বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানায় ওইসব মামলা করেছিল পুলিশ। এর মধ্যে পাঁচটি মামলা ছিল শাহবাগ থাকার। মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে নাশকতা, ভাংচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে এসব মামলা করা হয়েছিল। মামলাগুলোর কোনও মেরিট ছিল না। যে কারণে এগুলো বাতিল ঘোষণা করেছেন আদালত।”
বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে সারদেশে এমন ৩০টি মামলা করা হয়েছিল জানিয়ে আইনজীবী ইশরাক বলেন, এর মধ্যে ছয়টি আজ বাতিল হয়েছে।