আগেও বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে শুক্রবার যে ৯টি ফেডারেশনের নতুন অ্যাডহক কমিটি সরকার ঘোষণা করেছে সেখানে আবারও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন শাহ আলম। সাবেক এই দ্রুততম মানব দেশের ঝিমিয়ে পড়া অ্যাথলেটিকসকে আবারও জাগিয়ে তুলতে চান। সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে আলাপচারিতায় কথা বলেছেন অ্যাথলেটিকস নিয়ে নতুন সব পরিকল্পনার বিষয়ে-
সকাল সন্ধ্যা : অভিনন্দন আপনাকে। আবারও অ্যাথলেটিকসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। আপনার প্রথম কাজ কি হবে?
শাহ আলম : সামনেই জাতীয় অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ হবে। এটা ডিসেম্বরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সেই আয়োজন করা সম্ভব হবে না। তাই আমাদের প্রথম কাজ হবে মিটিংয়ের মাধ্যমে অতি শিগগিরই সেই তারিখ নির্ধারণ করা। এরপর সেই প্রতিযোগিতা থেকে অ্যাথলেট বাছাই করে জরুরী ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে ক্যাম্প করে প্রশিক্ষণের আয়োজন করব।
কারণ গত ৩-৪ মাসে সব কিছু ব্লক হয়ে গেছে। তড়িৎ গতিতে এটা চালু করে অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্স বাড়ানোই মূল চেষ্টা থাকব। দ্বিতীয়ত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গেমস আছে। এটার জন্য কিছু অ্যাথলেট বাছাই করে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যাতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমরা ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি।
সকাল সন্ধ্যা : গত কয়েক বছর দেখা গেছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মানেই ওয়ান ম্যান শো। দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমানের সফরসঙ্গী সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব মন্টু। এই সংস্কৃতি কি এবার বদলাবে?
শাহ আলম : নিজের চেয়ার বাঁচাতে ইমরানুরকে ব্যবহার করেছে মন্টু। প্যারিস অলিম্পিকে চোট লুকিয়ে ইমরানুর দৌড়েছে। এটা তো এক ধরনের ক্রাইম। অথচ ইমরানুর নাকি দৌড়াতেই চায়নি। যে কারণে আমরা শুধু একজনকে প্রাধান্য দিতে চাই না। সবাইকে দরকার আমাদের। একজনের পারফরম্যান্স ভালো হলে সে বিদেশে যাবে। কিন্তু পাইপলাইনে পরের ব্যাচ তৈরি করতে হবে। কারণ ইমরানুর আজ আছে , কাল যদি না থাকে তখন আমাদের কি হবে? একজনের পর যেন আরও তিনজন থাকে। এভাবেই প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।
সকাল সন্ধ্যা : আপনি নিজে দ্রুততম মানব ছিলেন। এক সময় এসএ গেমসে দ্রুততম মানব ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা হতেন। কিন্তু ১০০ মিটারে সেই সোনালী দিন আর নেই। এটা নিয়ে কি পরিকল্পনা থাকবে?
শাহ আলম : অবশ্যই পরিকল্পনা থাকবে। ১০০ মিটারে যে সোনা জেতার হিড়িক ছিল বাংলাদেশের সেটা তো আমার মাধ্যেমেই। ১ম, ২য়, ষষ্ঠ ও ৭ম সাফ গেমসে আমি নিজে কোচ ছিলাম। তখন ১০০ ও ২০০ মিটারে সোনা পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। এরপর ইমরানুর এসে এশিয়ান ইনডোরে ভালো করেছে। এটা আমাদের জন্য গর্ব। কিন্তু এখন থেকে আবার ওই সময়ের মতো ট্রেনিংয়ে আসতে হবে। ওই সময় প্রশিক্ষণের ওপর চাপ ছিল। জোর দিতাম। যে কারণে এই রেজাল্ট হয়েছে। প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এখন প্রশিক্ষণ হতে হবে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত। দেশি কোচের পাশাপাশি বিদেশি কোচও আনতে হবে। যাতে স্থানীয় কোচেরা প্রশিক্ষিত হয়।
সকাল সন্ধ্যা : সাম্প্রতিক সময়ে হাইজাম্পে ছেলে ও মেয়ে দুই ইভেন্টেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। হাইজাম্প নিয়ে আলাদা কোনও পরিকল্পনা থাকবে?
শাহ আলম : শুধু হাইজাম্প না। যেসব ইভেন্টে এসএ গেমসে ভালো করার সম্ভাবনা আছে-সব গুলোতেই নজর দিতে চাই।
সকাল সন্ধ্যা: শেষ প্রশ্ন। নতুন কমিটিতে বর্তমান অ্যাথলেট ও ১৫ বারের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার সদস্য হিসেবে জায়গা পেয়েছেন। বিষয়টা কিভাবে দেখছেন?
শাহ আলম : আমাদের আইনে এটা নিয়ে এমন কোনও সমস্যা নেই। তবে কিভাবে তারা এই সদস্যপদ দিয়েছে এটার জবাব তারা ভালো দিতে পারবে। সাধারণভাবে বুঝি একই গেমসে যে ব্যক্তি বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান বিচারের জন্য সেই ব্যক্তিকে কাঠগড়ায় দাড়ানোটা ঠিক হবে না। শিরিন চাইলে খেলতে পারবে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনও বাধা নেই। তবে একজন অ্যাথলেট যদি টপ ফর্মে থাকে তার সেই অবস্থান ধরে রাখা উচিত।