বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তিনি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তারেক রহমান ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। মা যখন প্রধানমন্ত্রী তখনও সরাসরি সরকারে যুক্ত ছিলেন না তিনি, ছিলেন না রাষ্ট্র পরিচালনায়ও।
যদিও দলের নেতাকর্মীরা প্রায়ই তার পরিচিতি হিসেবে দেশনায়ক ও রাষ্ট্রনায়ক উপাধি ব্যবহার করেন।
এখন থেকে তার নামের সঙ্গে এসব উপাধি ব্যবহার না করতে নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, “আজকের পর থেকে আমাকে দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক বলবেন না।
“একজন সহকর্মী হিসেবে আমার অনুরোধ রইল, আপনাদের নেতা হিসেবেও অনুরোধ-দয়া করে আমার নামের সঙ্গে আজকের পর থেকে দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক ব্যবহার করবেন না।”
মঙ্গলবার ঢাকার কাকরাইলের ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান। যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি কর্মশালায় যুক্ত হন তিনি।
কর্মশালায় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা তিনি; আলোচনা করেন ৩১ দফা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থা, বেকারত্ব দূর করাসহ নানা বিষয় নিয়ে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা আটকে আছে কোথায়
বাংলাদেশে পোশাক শিল্প ও রেমিটেন্সের বাইরে নতুন কর্মমুখর খাত তৈরি করার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তার মতে, আউটসোর্সিং হতে পারে সম্ভাবনাময় খাত।
দেশের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, “দেশে কোথাও একটা ষড়যন্ত্র চলছে। এজন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে, সঙ্গে রাখতে হবে জনগণকে।”
রাজনৈতিক মুক্তির জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই বলে মত দেন তিনি। এর জন্য স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োজন উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিএনপি যেকোনো মূল্যে দেশে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে।”
আওয়ামী লীগে জবাবদিহিতা না থাকায় তারা স্বৈরাচারি হয়ে উঠেছিল বলেও মনে করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের জবাবদিহি, প্রতিনিধির জবাবদিহি নিশ্চিত করাই মূল কাজ হবে। রাজনীতি রুগ্ণ হলে অর্থনীতিও রুগ্ণ হয়। রাজনীতি ও অর্থনীতি রুগ্ণ হলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা সব ব্যবস্থাই রুগ্ণ হবে। তাই জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।”
বিএনপির ৩১ দফার বাইরে ভালো কোনও সংস্কার প্রস্তাব এলে তাও গ্রহণ করা হবে, এমনটা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতায় গেলে তা নিয়ে কাজ করবে বিএনপি। উঠান বৈঠক সংস্কৃতি ফিরিয়ে এনে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব সর্বস্তরের মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতেও দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রশিক্ষণসভায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বক্তব্য দেন। এছাড়া মতামত দেন ঢাকার বিভাগীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।