দীর্ঘদিন ধরে জিইয়ে থাকা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক ড. খলিলুর রহমানের সহায়তা নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এজন্য তাকে উপদেষ্টার মর্যাদায় বিশেষ দূত হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মঙ্গলবার তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হয়।
তাতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে নিয়োগ দান করেছেন।
“প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি উপদেষ্টার মর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।”
পেশাদার কূটনীতিক খলিল দীর্ঘদিন জাতিসংঘে কাজ করেছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রধানের দায়িত্বও পালন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক ছাত্র খলিল পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যুক্ত হন তিনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত অগাস্টে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী এখন তিনজন হলেন।
অন্য দুজন হলেন- অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং লুৎফে সিদ্দিকী। তারা দুজনই উপদেষ্টার মর্যাদা পাচ্ছেন।
এর মধ্যে লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আব্দুল হাফিজ প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন বিশেষ সহকারী রয়েছেন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়। তারা হলেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক খোদা বকশ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।
মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় একটি সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন পর্যন্ত ১৩ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলায় আরও রোহিঙ্গা আসার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার এক সময় রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিলেও পরে শরণার্থী হয়ে থাকা এই জনগোষ্ঠীকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসাবে দেখছিল।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে প্রতিবেশী দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর প্রত্যাবাসনের আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার পরিবেশও আর আসেনি।