Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

‘সিন্ডিকেটের চাপ’ উপেক্ষা করে কম দামে সবজি বেচছেন তিনি   

সবজি বিক্রিতে ব্যস্ত লাইলা বেগম। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
সবজি বিক্রিতে ব্যস্ত লাইলা বেগম। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

টেকনাফ বাস স্টেশনে আবু সিদ্দিক মার্কেটের সামনে খোলা আকাশের নিচে সবজি বিক্রি করছেন লাইলা বেগম। আশপাশের দোকানের চেয়ে তার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। কারণ লাইলার দোকানে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম।

টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়া এলাকার বাসিন্দা লাইলা সবজির দোকান খুলেছেন বেশিদিন হয়নি, এক সপ্তাহ হচ্ছে। কক্সবাজারের রামু, বান্দরবানের ঘুমধুম, আলীকদমসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি সংগ্রহ করে টেকনাফে বিক্রি করছেন তিনি।

এই এক সপ্তাহেই ক্রেতাদের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে লাইলার সবজির দোকান। বাজারের অন্য দোকানে যখন বেশি দামে কিনতে হয়, সেখানে লাইলার দোকানে দাম কম।

তবে ক্রেতারা তার ওপর সন্তুষ্ট হলেও নিরুপদ্রবে ব্যবসা চাালিয়ে যেতে এরই মধ্যে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে তাকে। বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের লোকজন অর্থাৎ যে চক্রটি সবজির দাম নির্ধারণ করে বা দাম বাড়াতে নানা কারসাজি করে তারা নানাভাবে বাধা দিচ্ছে লাইলাকে।

এমনকি একবার পুলিশ ডেকে এনে লাইলাকে ব্যবসা গোটাতে চাপও দেওয়া হয়।

এনিয়ে উদ্বেগে থাকলেও এখন পর্যন্ত দমে যাননি লাইলা। তিনি বলেন, “কম দামে সবজি বিক্রি করার কারণে সিন্ডিকেটের অনেকে আমাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করে। তারপরও আমি থেমে যাইনি। ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।”           

লাইলা জানান, কম দামে সবজি বিক্রি করে প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার টাকা লাভ হয়। এই টাকায় সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে না তার।

লাইলার স্বামী গত ২৫ বছর ধরে অসুস্থ। পরিবারে আর উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় সংসারের হাল তাকেই ধরতে হয়। এই ২৫ বছর ধরে লাইলা কখনও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করেছেন, তো কখনও বাসাবাড়িতে কাজ করেছেন। আয় যা হতো, তা দিয়ে স্বামী, পাঁচ ছেলেমেয়ে আর নিজের খরচ মিটিয়েছেন।

২৫ বছর ধরে করে যাওয়া কাজ হঠাৎ ছেড়ে সবজি ব্যবসায় নামলেন কেন-এ প্রশ্নের উত্তরে লাইলা বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে সবজির দাম বাড়তি। এজন্য একটা সবজির দোকান দেওয়ার কথা ভাবি। ঋণ করে আবু সিদ্দিক মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অনুমতি নিয়ে দোকান খুলে বসি।”

টেকনাফে আবু সিদ্দিক মার্কেটের সামনে লাইলা বেগমের দোকান। ছবি: সকাল সন্ধ্যা

ক্রেতাদের মাঝে সবজি বিক্রির মধ্যেই নিজের ছেলেমেয়ে সম্পর্কে জানালেন লাইলা। বলেন, “বড় দুই ছেলে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। ছোট ছেলে আমাকে কাজে সহযোগিতা করে।

“এক মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর সে এখন আমার সঙ্গে থেকে আমাকে সহযোগিতা করে। আরেক মেয়ে পড়ালেখা করে।”

কথা বলার সময় লাইলার দোকান থেকে বেশ কিছু সবজি কিনছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল।

লাইলার দোকান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখানে কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে খবর পেয়ে আসি। এসে দেখি, অন্য দোকানের চেয়ে এই দোকানে দাম কম। তাই এখানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত