ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মমেকারস কমিউনিটির আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো ‘ফ্রাইডে মুভি নাইট’।
শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনীর আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল নির্মাতাদের নির্মিত ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রর্দশিত হয়।
চলচ্চিত্রগুলোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সদ্য নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কারিগরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘জুলাই অনির্বাণ’ চলচ্চিত্রটিও প্রদর্শন করা হয় এ আয়োজনে।
আয়োজনটির অন্যতম উদ্যোক্তা কামরুল আহসান লেনিন বলেন, “এটি স্বাধীন নির্মাতাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শনের সম্মিলিত প্রয়াস, যেখানে আমাদের চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে দর্শকের সামনে আমরাই হাজির হচ্ছি। বছরব্যাপী আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখি। ইতিমধ্যে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই মুক্তমঞ্চ ভেন্যুটি বিনামূল্যে অনুমোদন করে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। এর বাইরে আমরা এখনো পর্যন্ত কোন স্পন্সর না নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও দর্শকদের থেকে ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করছি।”
সম্প্রতি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন, ১৯৮৯-এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ-এর নতুন খসড়া অধ্যাদেশে পূর্বের ‘নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র’ উপবিভাগ থেকে কেটে ‘চলচ্চিত্র’ অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের এ প্রদর্শনীতে নির্মাতাদের পক্ষ থেকে খসড়া অধ্যাদেশ থেকে বাদ দেয়া চলচ্চিত্রকে পুনরায় সংযোজন করে শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্র বিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ বিভাগ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়।
খসড়া অধ্যাদেশে চলচ্চিত্রকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে নির্মাতারা বলেন, শিল্পকলা একাডেমির শুরু থেকেই চলচ্চিত্র যুক্ত ছিল। ফলে এখন চলচ্চিত্র বাদ দিয়ে শিল্পকলা চলতে পারে না। গণসংস্কৃতিতে চলচ্চিত্রের ভূমিকা বিশাল। ফ্যাসিস্ট বয়ানের বিপরীতে গণমানুষের বয়ান এবং স্বাধীন ও নতুন স্বর তৈরিতে শিল্পকলা একাডেমির ভূমিকা অনস্বীকার্য। এইজন্য খসড়া অধ্যাদেশে চলচ্চিত্রকে পুনরায় যুক্ত করে বিভাগ করার দাবী জানাচ্ছি।
এ আয়োজনে মাকসুদ হোসাইন পরিচালিত ‘রেমাক্রি’, তাওকির ইসলাম পরিচালিত ‘আয়না’, বিজন ও আরিফুর রহমান (প্রযোজক) এর ‘শবনম’, আশিক মোস্তফা পরিচালিত ‘ইন্টেরিওরস অ্যান্ড এক্সটেরিওরস’, তাসমিয়াহ আফরিন মৌ পরিচালিত ‘কবি স্বামীর মৃত্যুর পর জবানবন্দি’, কামরুল আহসান লেনিন পরিচালিত ‘ঘ্রাণ’, হেমন্ত সাদীক পরিচালিত ‘এ লেটার টু গড’, ফরিদ আহমেদ পরিচালিত ‘আনতারা’, গোলাম রাব্বানী পরিচালিত ‘ছুরত’, সুজন মাঝি পরিচালিত ‘গল্প সংক্ষেপ’ নামের স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হয়।
সব শেষে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ প্রদর্শিত হয়।
এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।