পুলিশের ব্যবহৃত পিস্তলের গুলি চুরিসহ বেশ কিছু অভিযোগে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রবিবার সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর বাদী হয়ে এই মামলা করেন। সোমবার মামলার এজাহার আসে আদালতে।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এসআই অনুপম দাস জানান, ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান এজাহার গ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে আগামী ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রবিবার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ (ডিএমআরসি) বিভিন্ন কলেজের ৭/৮ হাজার শিক্ষার্থী বেআইনীভাবে জনতাবদ্ধ হয়ে মারাত্মক অস্ত্র-সস্ত্রসহ দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ভাংচুর করে। সরকারি অস্ত্রের (পিস্তল) গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন চুরি, সরকারি ডিউটিতে ব্যবহৃত এপিসি গাড়ি ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া তারা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে, তাদের জীবননাশের হুমকি দেয় এবং ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে।
আর্মড পুলিশ কার বা এপিসি এবং ডিউটিরত পুলিশের মোটরসাইকেল ভাংচুর করায় দুই লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিজিত হাওলাদার নামে ডিএমআরসির একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর পুরান ঢাকার ন্যাশন্যাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ নভেম্বর মারা যায়। তবে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে গত ২১ নভেম্বর ডিএমআরসির শিক্ষার্থীরা ন্যাশন্যাল মেডিকেলে যায় প্রতিবাদ জানাতে।
সেদিন প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের হামলা শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলেন ডিএমআরসির শিক্ষার্থীরা।
এর প্রতিবাদে রবিবার ন্যাশনাল মেডিকেল ঘেরাওয়ের ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচি দেয় ডিএমআরসির শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত সেই কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রবিবার ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর চালায় ডিএমআরসির শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমণ্ডি আইডিয়াল কলেজ, দনিয়া কলেজসহ আরও কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও হামলা-ভাংচুরে যোগ দেয়।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজেও হামলা চালায়। তাদের হামলা-ভাংচুরে রবিবার কলেজদুটি অনেকটা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।
এর জবাবে সোমবার ডিএমআরসিতে পাল্টা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।
দুপুর ১২টার পর কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে মোল্লা কলেজে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।