দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় চলমান সহিংস পরিস্থিতির প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের কঠোরভাবে দমন করতে চায় না সরকার।
তিনি বলেন, “তারা আমাদের সন্তান। আমরা তাদের কঠোরভাবে দমন করতে চাই না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। এজন্য শিক্ষকরা রয়েছেন।”
মঙ্গলবার সুনামগঞ্জে তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওর পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে কারও রাস্তায় নামার প্রয়োজন নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “রাস্তা ব্লক না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েও দাবি জানাতে পারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এসে আমাদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারে।”
শিক্ষার্থীদের আপনজন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাস্তা ব্লক করলে সবাই অসুবিধায় পড়েন। তাদের সব দাবি-দাওয়া আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হবে। যেকোনো কথা, দাবি–দাওয়ার প্রয়োজনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হওয়া যায়। রাস্তা বন্ধ করা ঠিক নয়। এটা ছাত্রদের বোঝাতে হবে। এই দায়িত্ব সবার। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা সব সমাধান করতে চাই। আমরা এসব বিষয়ে কঠোর হতে চাই না।”
হাওর এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম দেখতে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে আরও ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তারা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ নেন। তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওর পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুই উপদেষ্টা ।
হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “কৃষকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। সরকার এ বিষয়ে যা করণীয় সব করবে। মধ্যস্বত্বভোগীরা যাতে প্রকৃত কৃষকদের ক্ষতির কারণ না হন। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “হাওরের বোরো ধান রক্ষায় ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে কেউ অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ হবে। সেইসঙ্গে ফসল রক্ষা বাঁধের বরাদ্দের নামে অহেতুক কোনো প্রকল্প নেওয়া হবে না, যা পরিবেশের ক্ষতি করে। এককথায় পরিবেশ রক্ষা করেই বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
“আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে বড় ধরনের বন্যা আসার আগে কৃষকরা সোনালি ধান ঘরে তুলতে পারেন।”
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে হয় তা নিশ্চিতেই দুই উপদেষ্টা সুনামগঞ্জে গিয়েছেন জানিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বাঁধের কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কাজ চলছে। প্রকল্প নির্ধারণে জরিপ হচ্ছে। কিন্তু পানি ধীরে নামছে। বইয়ে যে সময়ের কথা লেখা থাকে, সেটা তো প্রকৃতি মেনে চলে না। কাজে যাতে দেরি না হয়, ফসল যাতে ঝুঁকিতে না পড়ে সেটার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। কাজে অনিময় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এসময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়াসহ কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
