যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। বুধবার গ্রিনিচ মান সময় রাত ২টায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয়।
এর মধ্য দিয়ে গত অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধের ইতি ঘটল।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে থেমে থেমে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের সংঘাতে নিহত হয়েছে হাজারো মানুষ। এছাড়া প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় বহু ইসরায়েলি ও লেবানিজ।
এই যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হিজবুল্লাহর। তারা তাদের নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হারিয়েছে। তাদের আরেক শীর্ষস্থানীয় নেতা হাশেম সাফিয়েদ্দিনও এসময় ইসরায়েলের হাতে প্রাণ হারায়। তাকে নাসরাল্লার সম্ভাব্য উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছিল।
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার বলেন, “এনিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও লেবাননের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
“এটি যুদ্ধবিরতির স্থায়ী ব্যবস্থা, যা সব ধরনের শত্রুতা বন্ধে করা হয়েছে। হিজবুল্লাহসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা আবার ঝুঁকির মুখে ফেলতে দেওয়া যাবে না।”
বাইডেন জানিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে লেবাননের সীমান্ত অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনা ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করে নেবে ইসরায়েল। এসময় সেখানে যাতে হিজবুল্লাহ কোনও স্থাপনা পুনরায় নির্মাণ করতে না পারে, তা লেবাননের সেনাবাহিনীকে নিশ্চিত করতে হবে।
ইসরায়েলি ও লেবানিজরা আগামী অল্প দিনের মধ্যে নিজ নিজ দেশে নিরাপদে ফিরে যেতে পারবে বলেও জানান বাইডেন।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে হিজবুল্লাহ আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে তাদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও লেবাননের পার্লামেন্টের সদস্য হাসান ফাদলাল্লাহ দেশটির আল জাদিদ টেলিভিশনকে বলেছেন, লেবাননের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বিস্তারে তাদের সমর্থন আছে। এই যুদ্ধ হিজবুল্লাহকে আরও শক্তিশালী করবে।
ফাদলাল্লাহ বলেন, “হাজার হাজার মানুষ প্রতিরোধে শামিল হবে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিরস্ত্র করতে চেয়েছিল ইসরায়েল, যা আদতে তারা পারেনি।”
হিজবুল্লাহর আঞ্চলিক সমর্থক ইরান, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস বা ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদাল্লাহ বো হাবিব জানান, ইসরায়েলের বাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরে গেলে কমপক্ষে পাঁচ হাজার লেবানিজ সেনা সেখানে অবস্থান করবে।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করতে তারা প্রস্তুত। তবে হিজবুল্লাহ চুক্তি না মানলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।