মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় যুবলীগ নেতা শেখ রুমেল আহমদের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে তার মা ও চাচীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার গভীর রাতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রুমেল আহমেদ মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি, তিনি মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
নিহতরা হলেন, রুমেল আহমদের মা মেহেরুন্নেসা (৬৫) ও তার চাচী ফুলেছা বেগম (৬০)।
গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন রুমেল আহমেদ। ওই দিনের পর মৌলভীবাজার শহরে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
রুমেল আহমদের মামা মকছুছ মিয়া জানান, বাড়িতে রুমেলের মা ও চাচি থাকতেন। সিকিউরিটি গার্ড থাকতেন আলাদা রুমে। শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখে সিকিউরিটি গার্ড। পরে আশপাশের লোকজনকে ও মসজিদের মাইকে বিষয়টি জানানো হয়। খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মকছুছের দাবি, বাড়ির পাশে পাঁচ লিটারের একটি বোতলে কিছু পেট্রল পাওয়া গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেন জানিয়ে মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার যীশু তালুকদার জানান, “আগুনের ধোঁয়ায় তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।”
তিনি বলেন, “ডুপ্লেক্স বাড়িটি বিভিন্ন জাতের বোর্ড দিয়ে ডেকোরেশন করা। বৈঠক খানায় আগুনের সূত্রপাত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।”
যদিও কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, কীভাবে বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড হতে পারে।
নিহত দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
সিকিউরিটি গার্ডের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “বোতলে ডিজেল ছিল। এখনতো আমন ধান ঘরে তোলার মৌসুম। ধান মাড়াইয়ের মেশিনে ব্যবহারের জন্য কেউ ডিজেলের বোতল এনে থাকতে পারে। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ঘটনা তদন্তে সিলেট থেকে বিশেষ টিম এসেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসও আগুনের কারণ অনুসন্ধান করছে বলে জানান তিনি।