বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নম্বর কাটার ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্যবারের মতো এবারও পাস নম্বর ধরা হয়েছে ৪০।
রবিবার রাতে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
সেখানে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে এবারের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হবে। ভর্তি নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী নির্ধারিত ছকে অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এর শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে, লিখিত ভর্তি পরীক্ষা এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটির জন্য এক নম্বর হিসেবে মোট নম্বর ১০০।
কারা আবেদন করতে পারবে
এবার ২০২৩ সালে এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে তিন এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ/মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট নম্বর থেকে ছয় নম্বর কেটে মেধা তালিকায় অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীকে ২০২৩ সাল অথবা ২০২৪ সালে এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ২০২১ সালের আগে এসএসসি/ও লেভেল/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না।
প্রার্থীকে এসএসসি/ও লেভেল/সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং এসব পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগসহ অবশ্যই জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন থাকতে হবে। এসএসসি/ও লেভেল/সমমান এবং এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে নয় হতে হবে।
আদিবাসী ও পার্বত্য জেলার আদিবাসী বাদে অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি/ও লেভেল/সমমান এবং এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষা দুটিতে মোট জিপিএ কমপক্ষে আট হতে হবে। তবে এককভাবে কোনও পরীক্ষায় জিপিএ তিন দশমিক ৫০ এর কম হলে আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব আবেদনকারীর জন্যই এটা প্রযোজ্য হবে যে এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম গ্রেড পয়েন্ট চার অবশ্যই থাকতে হবে।
এসএসসি/ও লেভেল/সমমান ও এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ১০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করে নিম্নলিখিতভাবে মূল্যায়ন করা হবে। সেক্ষেত্রে এসব পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এর ১০ গুণ হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ এবং এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এর ১০ গুণ হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ নম্বর থাকবে ।
ভর্তি পরীক্ষার ফি এক হাজার টাকা, এই ফি শুধু প্রি-পেইড টেলিটকের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
যেভাবে হবে নম্বর ভাগ
জীববিজ্ঞানে ৩০, রসায়নে ২৫, পদার্থবিজ্ঞানে ২০, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞানে (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ১০। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা।
লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য এক নম্বর দেওয়া হবে, কেউ একটি প্রশ্নের একাধিক উত্তর দিলে তা ভুল বলে গণ্য হবে।
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে, অর্থাৎ চারটি প্রশ্নের ভুল উত্তর দিলে এক নম্বর কাটা যাবে।
লিখিত পরীক্ষায় কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধাক্রমসহ ফল প্রকাশ করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষা ১৭ জানুয়ারি
ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন অনলাইনে শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে আর শেষ হবে ২৭ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে।
পরদিন অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনের ফি জমা দেওয়া যাবে। ফি জমা দেওয়ার পর ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রঙিন প্রিন্ট করার তারিখ ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০ টায়, চলবে এক ঘণ্টা।
স্বাস্থ্য বিভাগ এর আগেই জানিয়েছে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি- নাতনির কোটা বাতিল করা হয়েছে। এতে শুধু মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।
এ কোটার অধীনে আসন শূন্য থাকলে সাধারণ মেধা কোটা থেকে মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে এই কোটার আসন পূরণ করার শর্ত দেওয়া আছে। এর আগে ২০২৪ সালের ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং সন্তানের সন্তানাদির জন্য দুই শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল।