আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় সৃষ্ট সরবরাহ-সংকটের কথা বলে দেশে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে সরকার।
বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটারের নতুন দাম ১৭৫ টাকা করা হয়েছে, যা এর আগে এপ্রিলে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৫৭ টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৪৯ টাকা। নতুন এই দাম আজ সোমবার থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
এদিন ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এ তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
উপদেষ্টা বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় সরবরাহ-সংকট হয়েছে। এর ফলে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। মজুতের ঘাটতি না থাকলেও বাজারে তেলের সরবরাহের ঘাটতি আছে। আশা করি, এবার সরবরাহ ঘাটতি কমে আসবে।”
দেশে তেলের যে মজুদ আছে তা সন্তোষজনক, তারপরও সব জায়গায় মজুতদারির তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে তেলের ঘাটতি রয়েছে, এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভোক্তারাও অস্বস্তিতে রয়েছেন। সেজন্য আমরা তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, বাজারে আর তেলের ঘাটতি হবে না।
“এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে দেশে স্থানীয় মজুতদারী বেড়েছে। তেলের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। অনেকে কিনে মজুত করেছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সেটা মনিটরিং করছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এখন একটি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি; আর সমস্যা হবে না।”
এ সময় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিরগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, “কয়েকদিন থেকে আমারা কীভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ১২০০ ডলারে উঠেছে।
“গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল ১০৩৫ ডলার। এখন আমরা ১১০০ ডলার ধরে লিটারে ৮ টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল ১২০০ ডলারে খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে, সে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে। কারণ, বিশ্ববাজার এখনও স্থিতিশীল নয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে আলুর দামে অস্থিরতা এখনও আছে। নতুন আলু উঠলে দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি।”