বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নেওয়ার পর নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি।
সামরিক প্রয়োজন ও জননিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তাদের এই সিদ্ধান্তের পরপরই নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের নাফ নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের বিআরএম-৬ থেকে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ও বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারে সোমবার নৌ টহল পরিচালনা করা হয়।
কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে নতুন করে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাননি তারা।
জান্তা বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তীব্র সংঘাতের পর গত রবিবার রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি।
মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখলের মধ্য দিয়ে শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে বিবৃতি দেয় সশস্ত্র ওই গোষ্ঠী।
আরাকান আর্মির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, গত রবিবার বিজিপির ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি থেকে জান্তা সরকারের অনুগত আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যরা পালিয়ে যায়।
এরই মধ্যে জান্তা বাহিনীর সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরিন তুনকে আটক করা হয়েছে। তিনি রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৫ নং অপারেশন কমান্ডের অধিনায়ক। একইসঙ্গে জান্তা বাহিনী ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৮০ জন যোদ্ধাকেও আটক করে বিদ্রোহীরা।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্ত এলাকার তিনটি শহর মংডু, বুথিডং ও পালেতওয়া দখলে নেওয়ার দাবি করে আরাকান আর্মি।
মংডু ও বুথিডং বরাবর বাংলাদেশের সীমান্ত আর পালেতওয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে।