Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

আওয়ামী লীগের মদদে গুম, খুন চলেছে : হাসনাত

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে গুম, খুন ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে গুম, খুন ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
[publishpress_authors_box]

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে গুম, খুন ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক গণজমায়েতে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।

গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদের গড়ে তোলা ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এই গণজমায়েতের আয়োজন করে।

সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি অংশ নেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মী।

গণজমায়েতে উপস্থিত হয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে গুম, খুন ও নির্যাতন চালানো হয়েছে।

“এসব গুম-খুনে জড়িতদের যারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ‘সেফ এক্সিটের’ (নিরাপদ প্রস্থান) সুযোগ দিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। সেই সঙ্গে যারা বিরোধীমত দমনে আমাদের নিরীহ পুলিশকে গুম-খুনের কাজে ব্যবহার করেছে তাদেরকেও সামনে আনতে হবে।”

“এছাড়া যারা ফ্যাসিবাদীকে নিয়ে ছবি বানিয়েছে, তাদেরকে পক্ষে লিখেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে।”

ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার কথা বলেছে, তাদের উদ্দেশ্য কখনও সফল হবে না বলেও মন্তব্য করেন ছাত্র জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া হাসনাত। তিনি বলেন, “যারা বিচারের আগেই আওয়ামী লীগকে আবার রাজনীতির মাঠে আনতে চান, তাদের শহীদের রক্তের উপর দিয়ে যেতে হবে।”

গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই টানাপড়েন চলছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে। সম্প্রতি দেশে সনাতনী সাধু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর সেই সম্পর্ক আরও বেশি অস্থিরতার মুখে পড়ে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন হাসনাত। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আর কোনও নতজানু সম্পর্ক নয়। এখন থেকে কথা হবে চোখে চোখ রেখে।”

সংখ্যালঘুদের উসকে দিয়ে ভারত দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিন্তু আমরা ভারতের ফাঁদে পা দেইনি। তাদের সঙ্গে আর কোনও সমঝোতার রাজনীতি চলবে না। আর কোনও গুম নয়, আর কোনও খুন নয়। হয় মাতৃভূমি, না হয় মৃত্যু।”

গণজমায়েতে শুধু গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরাই নয়। অংশ নেন আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভিন্নমতের কারণে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার অনেকে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
গণজমায়েতে শুধু গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরাই নয়। অংশ নেন আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভিন্নমতের কারণে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার অনেকে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

গণজমায়েতে জোরপূর্বক গুম, ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যা, জুলাই গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা অপরাধের বিচার দাবি করা হয়। সেখানে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাদের স্বজনরা।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, “আমরা হয়তো জীবনে বেঁচে আছি। তবে আমাদের পাশ থেকে অনেকে গুম হয়েছে, খুনের শিকার হয়েছে। আমাদের সামনে অনেকে আহত ও নির্যাতিত হয়ে বসে আছে।”

যারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে শাস্তির আওতার আনার দাবি জানিয়েছেন এই নেতা।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “আমাদের ১২ জন নিরীহ ব্যক্তিকে ফাঁসি দিয়েছে খুনি হাসিনা সরকার। আয়নাঘরে বন্দি রেখেছিল বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আমানউল্লাহ আমান আজমীকে। আমরা আর কোনও ফ্যাসিবাদের চেহারা দেখতে চাই না। আমরা ১৮ কোটি জনগণের মুখে হাসি দেখতে চাই।”

এসময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিচারের দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র শামান্তা শারমিন বলেন, বিগত বছরগুলোতে গুম-খুনের সাথে জড়িত পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে নিম্নস্তর পর্যন্ত যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বিভিন্ন সময়ে দেশে আহত, নিহত ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করা হয় গণজমায়েতে। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন দলের নেতারা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
বিভিন্ন সময়ে দেশে আহত, নিহত ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করা হয় গণজমায়েতে। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন দলের নেতারা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

গণজমায়েতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইশরাক হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত