নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে আরাকান আর্মি নৌ চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর এবার টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথসহ নদীটির বাংলাদেশ অংশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্ট মার্টিনমুখী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জান্তা বাহিনীর সঙ্গে ছয় মাস ধরে তীব্র সংঘাতের পর গত রবিবার বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি।
এরপর সামরিক প্রয়োজন ও জননিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “মিয়ানমারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি জেলেসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলকারীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে নৌযান নিয়ে না নামতে সীমান্ত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
“তবে কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্ট মার্টিনমুখী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে।”
সেন্ট মার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, “বুধবার সকালে ইউএনও কার্যালয় থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথ ও নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে নৌ চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
“পাশাপাশি সেন্ট মার্টিন ও টেকনাফ থেকে কোনও ট্রলার ছাড়া যাবে না বলে জানানো হয়। এ নৌপথে ২৭টি সার্ভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিডবোট রয়েছে।”
মিয়ানমার থেকে গত শনিবার থেকে পণ্যবাহী কোনও ট্রলার ও জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি এবং মালামাল খালাস করা ট্রলার ও জাহাজ মিয়ানমারে ফেরত যায়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, “সর্বশেষ গত শুক্রবার মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে মাছভর্তি একটি কার্গো ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙর করে। এরপর আর কোনও ট্রলার বা জাহাজ আসেনি।
“বর্তমানে মালামাল নিয়ে আসা চারটি কার্গো ট্রলার স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙর করা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ট্রলার থেকে মালামাল খালাস করা হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারে সেগুলো ফেরত যেতে পারছে না।”
বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া শহর মংডু আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ার পর টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ জানিয়েছেন, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে সক্রিয় রয়েছে বিজিবি।