Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভারতীয় ‘আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের পদযাত্রা

ex-police-officers
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘ভারতীয় আগ্রাসন ও অপপ্রচারের’ প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছেন পুলিশের একদল সাবেক কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স গেইটের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে একটি প্রতিবাদলিপি জমা দেওয়া হয়।

প্রতিবাদলিপিতে অবিলম্বে ‘বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা ও অপপ্রচার’ বন্ধ করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েয়েছে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি।

তাদের অন্য দাবিগুলো হলো-

১. ভারতে বাংলাদেশ হাই কমিশন, উপ হাই কমিশনসহ সব বাংলাদেশি স্থাপনার সুষ্ঠু নিরাপত্তা দেওয়া।

২. শেখ হাসিনার সব অপ-তৎপরতা বন্ধ করা ও চাহিবামাত্র তাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।

৩. সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা।

৪. হাসিনা-মোদির গোপন চুক্তি থাকলে তা প্রকাশ করা। ট্রানজিট, বিদ্যুৎসহ সব বৈষম্যমূলক চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা।

এবং

৫. বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করে দেশেই বিশ্বমানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত। ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ-ভারত পরস্পর অবিচ্ছেদ্য। অনস্বীকার্য যে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের স্বাধীনতা অর্জনকে সহজ করেছে। কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরে অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারকে সর্ববিধ সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশে গণতন্ত্র হত্যা ও মাফিয়া রাজত্ব প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে এসেছে।

“আর অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে বহু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুবিধা। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে এবং তাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ভারত সরাসরি বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”

ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভিত্তিহীন নেতিবাচক অপপ্রচার চলছে অভিযোগ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত আক্রমণ ও অত্যাচারের কাল্পনিক কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। অথচ এ দেশে স্মরণাতীত কাল থেকে হিন্দু-মুসলমানসহ সব সম্প্রদায় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছে। লংখ্যালঘু ইস্যু তৈরি করে এ দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রের তকমা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের মদদে ভারতীয় একটি মহল চেষ্টা করে যাচ্ছে।”

প্রতিবাদলিপিতে অভিযোগ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাশকতামূলক কাজ করার ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আপত্তিকর ও দেশদ্রোহিতামূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যাতে এ ধরনের বক্তব্য রাখতে না পারেন, সে সংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ ভারত সরকার অগ্রাহ্য করছে।

কলকাতা ও ত্রিপুরায় বাংলাদেশের উপ ও সহকারী হাই কমিশনের নিরাপত্তা দিতে ভারত সরকার ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “সেখানে আমাদের প্রিয় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে, যা দেখে জাতি হিসেবে আমরা বাংলাদেশিরা মর্মাহত হয়েছি।”

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ভারত বৈরিতামূলকভাবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় অনেক হাসপাতাল বাংলাদেশিদের জন্য চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

“মনে রাখা প্রয়োজন, এসব ভারতীয় কুপ্রতিবেশিতা আমাদের চেয়ে ভারতের ক্ষতি করছে বেশি। এছাড়া অব্যাহত গতিতে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। বারংবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তারা এ নির্মমতা চালিয়ে যাচ্ছে।”

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চায়- আমরা এরূপ আচরণ বরদাশত করব না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকারের ঐক্য প্রক্রিয়াকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করে এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।

“আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমরা এমন এক বাহিনীর উত্তরসূরি যারা রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে সর্বপ্রথম পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। আবারও প্রয়োজন হলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”

পদযাত্রা ও প্রতিবাদলিপি দেওয়ার কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আকবর আলী।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে পদযাত্রার শুরুতে তিনি বলেন, ভারতের দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না। বাংলাদেশের সার্বোভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় প্রস্তুত পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত