রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সার কারখানার জন্য আমদানি করা কাঁচামাল নিম্নমানের বলে অভিযোগ ওঠায় পণ্য খালাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর থেকে আসা এসব পণ্য খালাস করা হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নেবে চট্টগ্রামের টিএসপি সার কারখানা।
কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সার তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় রক ফসফেট, যা বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর সাড়ে ২৫ হাজার টন রক ফসফেট নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে ‘হালিত ইলডিরিম’ নামে একটি জাহাজ। এই রক ফসফেট সরবরাহ করেছে সাইপ্রাসের মিড গালফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, জাহাজটিতে পণ্য বোঝাই করা হয়েছে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে।
কথা ছিল, জাহাজ থেকে রক সালফেট নামিয়ে সেই পণ্য দিয়ে দ্রুত টিএসপি উৎপাদনে যাবে কারখানাটি। কিন্তু এসব পণ্য নিম্নমানের অভিযোগ ওঠায় পণ্য খালাস বন্ধ রেখে নমুনা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষাগারে। ফলে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে টিএসপি কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সেন সুখেন চন্দ্র সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “কাঁচামাল নিম্নমানের বলা এখনই যাবে না। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা জাহাজ থেকে রক ফসফেট নামানো স্থগিত করেছি। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা জাহাজ থেকে নমুনা ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা করবে। রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এই সরবরাহকারী আগে থেকেই টিএসপি সার কারখানাকে কাঁচামাল সরবরাহ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগে এমনটি হয়নি। এবার কেন হলো সেটিই বুঝছি না।”
বছরে এক লাখ টন টিএসপি সার উৎপাদনের সক্ষমতা আছে চট্টগ্রামের এই টিএসপি কারখানার। এর বাইরে সালফিউরিক এসিড উৎপাদন করে সাড়ে ১৭ হাজার টন, ফসফেট জিপসাম ৭৫ হাজার টন এবং ২৮২ টন সালফারও উৎপাদন করে।
কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে টিএসপি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে ৮৭ হাজার টন টিএসপি সার উৎপাদন করেছে। এবারও সমপরিমান সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কিন্তু কাঁচামাল সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। সে কারণে এই চালানে আসা রক ফসফেট কারখানাটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রকৌশলী সেন সুখেন চন্দ্র বলেন, “আমাদের এখনও কাঁচামাল সংকট আছে। এই চালানটি সঠিক সময়ে না পাওয়ায় টিএসপি উৎপাদন ব্যহত হবে। আমরা চাইছি দ্রুত সেটি সমাধান করতে।”