ভোরেই মারদাঙ্গা ক্রিকেটের লড়াইয়ে নামছে উইন্ডিজ ও বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ের প্রথম ম্যাচ। যেখানে বাংলাদেশের বিচরণ অনেকদিনের হলেও দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে। বিপরীতে উইন্ডিজ এই ফরম্যাটের দুবারের চ্যাম্পিয়ন।
এমন অবস্থায় উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো খেলার “চেষ্টা” করার আশ্বাস ছাড়া বড় প্রত্যাশা দিতে পারলেন না লিটন দাস। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের কাছে অবশ্য জয়ের বিশ্বাস ছড়ানোর আত্মবিশ্বাসও নেই।
সেন্ট ভিনসেন্টের আরনস ভেল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছে এ বছরের বিশ্বকাপে। যে ম্যাচটি বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম দুঃখের ম্যাচ হয়ে থাকবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওই লড়াই জিতলে প্রথমবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের।
ওই ম্যাচে আফগানিস্তানের দেওয়া মাত্র ১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি বাংলাদেশ। বৃষ্টির বাধা পড়া ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে নামা লিটন দাসদের রান তোলা অবিশ্বাস্য কঠিন হয়ে যায়। ওই ম্যাচে দলের সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছিলেন লিটন। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলা না খেলার ভবিষ্যত ছিল তার ব্যাটে।
সেদিন লিটন ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেই লিটনের নেতৃত্বেই সেন্ট ভিনসেন্টে সোমবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে নামছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে না ওঠার দুঃখ ম্যাচ জিতিয়ে ভোগাতে পারবেন লিটন?
বাংলাদেশ অধিনায়ক আশ্বাস দিলেন চেষ্টা করার, “সাধারণত আমাদের জন্য টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সবসময় কঠিনই হয়। যেহেতু এটা উইন্ডিজের হোম গ্রাউন্ড ওরা এগিয়ে থাকবে। তবুও চেষ্টা করবো টি-টোয়েন্টিতে আমাদের কমতি গুলো দূর করে একটা ভালো সিরিজ উপহার দেওয়ার।”
ভালো করার একটা আশ্বাস হতে পারে নতুন উইকেট। বিশ্বকাপের উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন ছিল স্পিন বেশি ধরে বলে। তবে লিটন জানালেন এবারের উইকেটটা ভিন্ন, “এটা বিশ্বকাপের উইকেটের চেয়ে ভিন্ন দেখা গেছে। হয়তো ওদের হোম সিরিজ বলে ভিন্ন ভাবে প্রস্তুত করেছে।”
উইকেট ভিন্ন বলে একাদশ নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসেনি বাংলাদেশ দল। লিটন জানালেন ম্যাচের দিনই ঠিক করবেন কারা খেলবেন। দলে একদম নতুন মুখ রিপন মন্ডল। এই পেসার শরিফুল ইসলামের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া দলে ফিরেছেন শামীম হোসেন পাটওয়ারী ও আফিফ হোসেন।
দলের বাকি সদস্যরা সবশেষ ভারত সিরিজ খেলেছেন। যে সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য বেশ কঠিন ও শিক্ষার ছিল। টি-টোয়েন্টিতে সেরা দলের বিপক্ষে হারলেও শেখার থাকে। ওই সিরিজের পর দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টেস্ট ও উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। তাই টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতিতে ঘাটতি পড়েছে কিছুটা।
অবশ্য লিটন তা মানছেন না, “না আমাদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি নেই। গতকালও লাইটের আলোয় অনুশীলন করেছি। এছাড়া আমরা সবাই টেস্ট, ওয়ানডে খেলার মধ্যেই ছিলাম। দলে কয়েকজন নতুন এসেছে। তারাও কিছু সেশন অনুশীলন করেছে।”
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভালো সিরিজ খেলেছে উইন্ডিজ। ঘরের মাঠে ওয়ানডে জিতেছে তারা। তবে টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায় ৩-১ ব্যবধানে। ৫ ম্যাচ সিরিজের একটি পরিত্যক্ত হয়। তবে ওই সিরিজের বেশিরভাগ ম্যাচেই রান হয়েছে। ক্যারিবিয়ান ব্যাটাররা ইংলিশ পাওয়ার হিটারদের জবাবে বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই এই সিরিজেও একই পরিকল্পনায় এগোবেন উইন্ডিজ ব্যাটাররা। তবে তাদের ব্যাটারদের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাটারদের পাওয়ার হিটিং হয়তো দেখা যাবে না। কারণ দলের অধিনায়ক নিজেই আছেন অফফর্মে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠে দলকে পথ দেখাতে পারবেন তো!