Beta
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

জমিয়তের সাবেক এমপি শাহীনূর এবার যোগ দিলেন খেলাফত মজলিসে

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে শাহীনূর পাশা দলটিতে যোগ দেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে শাহীনূর পাশা দলটিতে যোগ দেন।
[publishpress_authors_box]

আবারও দল বদল করলেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থী হওয়া এই নেতা এবার যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে।

সোমবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে তিনি দলটিতে যোগ দেন ।

এসময় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, নায়েবে আমির রেজাউল করিম জালালী, যুগ্ম মহাসচিব জালাল উদ্দীন আহমদ, আতাউল্ল্যাহ আমীন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা সামিউর রহমান মুসাসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শাহীনূর পাশা চৌধুরী সিলেট অঞ্চলের ইসলামভিত্তিক রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। ১৯৯২ সালে ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। টানা ৩৫ বছর তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। এই সময়ে তিনি দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

হঠাৎ করেই গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর এই দলের হয়ে সুনামগঞ্জ ৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন।

তখন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তার দলীয় সব পদ স্থগিত করে।

দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এবার তৃণমূল বিএনপি থেকে খেলাফতে মজলিসে যোগ দিয়ে আবারও আলোচনায় এলেন শাহীনূর পাশা চৌধুরী।

সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “জমিয়তের পতাকাতলেই আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন। ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে বিগত দিনে আমি জেল জুলুম সহ্য করেছি। তবে জমিয়তে ফেরার সুযোগ না পাওয়ায় আমি খেলাফত মজলিসে যোগ দিয়েছি।”

বার বার দল পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীনূর পাশা বলেন, “আমি সংসদীয় রাজনীতির ধারায় বিশ্বাসী ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মী। ৪০ বছর ধরে নির্বাচনের মাঠে আছি। আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি আমার আস্থা আছে। আশা করি বর্তমান বাস্তবতায় দল পরিবর্তনকে তারা স্বাভাবিকভাবেই নেবেন।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি থেকে অংশ নেওয়ার পর জমিয়তের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার এলাকার মানুষের সেবা করার জন্য একটা উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন খেলাফত মজলিসে যোগ দিয়েছি। আমি আদর্শচ্যুত হইনি।”

পেশায় আইনজীবী শাহীনুর পাশা চৌধুরী ১৯৯৬ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী হিসেবে খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন।

দুটি নির্বাচনেই তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সামাদ আজাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।

পরে ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে আবদুস সামাদ আজাদ মারা গেলে উপনির্বাচনে শাহীনূর পাশা চৌধুরী চার দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন।

ওই নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এবং যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নজরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন।

২০০৮ সালে শাহীনূর পাশা চৌধুরী আবারও চার দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন কিন্ত সেবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ মান্নানের কাছে হেরে যান।

দলীয় সিদ্ধান্তে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ না নিলেও ২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকেন। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সোনালী আঁশ প্রতীকে অংশ নেন এবং নৌকার প্রার্থী এম এ মান্নানের কাছে পরাজিত হয়ে জামানত হারান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত