আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে আরও এক ধাপ এগিয়েছে রাশিয়া। এর অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী সংগঠনের যে তালিকা মস্কো করেছে, সেখান থেকে তালেবানের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার এনডিটিভি জানিয়েছে, রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমায় একটি আইন পাস হয়েছে, যা আদালতকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষিত সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার অনুমতি দেবে।
এই আইনে বলা হয়, রাশিয়ার তালিকাভুক্ত কোনও সংগঠন যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আর লিপ্ত না থাকে, সেক্ষেত্রে ওই সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠনের আনুষ্ঠানিক তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলার আদেশ দেবে রুশ আদালত।
এই আইন অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রসিকিউটর জেনারেল আদালতে একটি আবেদন করবেন, যাতে বলা হবে, নিষিদ্ধ ওই সংগঠন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আর জড়িত নয়। বিচারক তখন তালিকা থেকে ওই সংগঠনকে বাদ দেওয়ার আদেশ জারি করবেন।
বলা হচ্ছে, এই আইন ব্যবহার করে প্রথমে তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেবে মস্কো। এরপর সরানো হতে পারে সিরিয়ার হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নাম। সিরিয়ার এই সংগঠনের নেতৃত্বেই গত সপ্তাহে দুই যুগের কর্তৃত্ববাদী শাসক বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালান।
অনুগত বাশারকে রাশিয়ায় আশ্রয় দিলেও তাকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন পুতিন।
এরই মধ্যে এ বিষয়ে তাকে পরামর্শ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রজাতন্ত্র চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত কাদিরভ বলেছেন, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে মস্কোর উচিত সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন।
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে রাশিয়া বিশ্বের যে কয়েকটি সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তালিকা করেছিল, তাতে তালেবানের নাম ছিল। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে করা ওই তালিকার পর ২০২০ সালে সেটিতে যুক্ত করা হয় সিরিয়ার এইচটিএসের নাম।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী দীর্ঘ দুই দশক পর ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে তালেবানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে মস্কো।
এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের জুলাইয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তালেবান এখন তার মিত্র শক্তি।
তবে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে তালেবানের নাম কাটার অর্থ এই নয়, আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসীন এই সংগঠন পরিচালিত সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে মস্কো।